এদিকে অঞ্জু ঘোষ দীর্ঘদিন ধরে কলকাতায় স্থায়ীভাবে বসবাস করছেন। সম্প্রতি চলচ্চিত্র সাংবাদিক সমিতির নির্বাচনে তার লাকী নায়ক ইলিয়াস কাঞ্চন সভাপতি নির্বাচিত হওয়ায় উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন তিনি এক জাতীয় দৈনিকের কাছে।
প্রথমের জানতে চাওয়া এ অভিনেত্রী কেমন আছেন কলকাতায়? অঞ্জু ঘোষ বলেন, মাঝখানে তো ভালোই ছিলাম। ইদানীং কলকাতায় করোনা যেভাবে আঘাত করছে বলে বোঝাতে পারবো না। কি যে ভয়ঙ্কর! একমাত্র ভগবানই জানেন।
বাংলাদেশে চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির তো আপনি আজীবন সদস্য। ইচ্ছে কী হয় ভোট প্রদান করতে? এ অভিনেত্রী বলেন, কেন চাইবো না। এই এফডিসি অঞ্জু ঘোষের তীর্থস্থান। আমার রুটিরুজি, সাফল্য সবই তো এই জায়গা থেকেই অর্জন। হয়তো আজ পরবাসী। কিন্তু ফেলে আসা সোনালী অতীতকে কেউ ভুলতে পারে না। সত্যি অনেক ভালো লাগছে আমার সহকর্মী, বড় ভাই কাঞ্চন ভাই শিল্পী সমিতির সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন। তার সঙ্গে অনেক সিনেমায় অভিনয় করেছি। অনেক বিনয়ী ও সজ্জন ব্যক্তি তিনি। নির্বাচনে কাঞ্চন ভাইয়ের বিজয়ে খুব খুশী হয়েছি।
নির্বাচন নিয়ে তো বিতর্কও হচ্ছে? অঞ্জুর উত্তর- সেটা না হওয়াটাই ভালো। সবার মিলে মিশে কাজ করা উচিত। এবারের নির্বাচনে আমার সিনিয়র সুচরিতা, অঞ্জনা, রোজিনারা নির্বাচিত হওয়ায় অনেক খুশি লাগছে। একটা কথা খুব মনে পড়ছে।
সেটা কি? অঞ্জু ঘোষ বলেন, আমাকে ও রোজিনাকে নিয়ে সেই সময় কি লেখালেখি চিত্রালী, পূর্বানীতে! আবাহনী-মোহামেডানের মতো দুই শিবিরে আমাদের বিভক্ত করে দিতো সাংবাদিকরা। কিন্তু আমি ও রোজিনা এসব প্রতিবেদন পড়ে হাসতাম। যখন এফডিসিতে আমাদের দুজনের শুটিং থাকতো লাঞ্চ বিরতিতে আমরা একে অন্যের শুটিং ফ্লোরে যেতাম, গল্প করতাম। অনেকদিন পুরনো সহকর্মীদের সঙ্গে দেখা হয় না। খুব মিস করি।
সেই সময়ের শিল্পী সমিতির নির্বাচনের কথা কি মনে পড়ে? এ নায়িকা বলেন, সেই সময় শিল্পী সমিতির নির্বাচনের দিন এফডিসিতে পিকনিকের আমেজ বিরাজ করতো। সারা বছর ধরেই তো শুটিং নিয়ে ব্যস্ত থাকতাম আমরা। একটি দিন শিল্পীদের মিলনমেলা হতো। অনেকবার ভোটার হিসেবে ভোট প্রদান করেছি। কিন্তু এবার ভিন্নচিত্র দেখলাম টেলিভিশন পর্দায়। নির্বাচনে এতো পুলিশ, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উপস্থিতি। আমাদের সময় কিন্তু এ রকম ছিল না।
চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও বিনোদন সাংবাদিক ভাইরাই শুধু নির্বাচনের দিন উপস্থিত থাকতেন। নায়ক রাজ রাজ্জাক, সোহেল রানা, আলমগীর, উজ্জ্বল, আজিম, সুচন্দা, কবরী, শাবানা, ববিতা, রোজী আফসারী, আনোয়ারা- এক একজন উজ্জ্বল তারকা উপস্থিত থেকে নির্বাচনকে আলোকিত করতেন।
বর্তমানে অভিনয়কে ঘিরে আপনার পরিকল্পনা কি? অঞ্জুর উত্তর- অভিনয়ের চেয়ে আমার পরিকল্পনা রয়েছে নির্মাণ নিয়ে। ইচ্ছে আছে পুরোপুরি বিনোদনভিত্তিক গল্প নিয়ে সিনেমা নির্মাণের। প্রাথমিক গল্প বাছাই করছি। করোনার প্রকোপ কমলেই আমরা প্রজেক্ট নিয়ে আসবো।
উল্লেখ্য, বালাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় ২৮ জানুয়ারি। এবার লড়াই করেছে ইলিয়াস কাঞ্চন ও নিপুণ প্যানেল এবং মিশা সওদাগর ও জায়েদ খান প্যানেল।
দুটি প্যানেল থেকেই ভিন্ন ভিন্ন শিল্পী নির্বাচিত হয়েছেন এবার। সভাপতি পদে নির্বাচিত হয়েছেন ইলিয়াস কাঞ্চন এবং সাধারণ সম্পাদক পদে জায়েদ খান।
ঢাকা/মীম
0 মন্তব্যসমূহ