সর্বশেষ খবর

10/recent/ticker-posts

কালোবাজারিদের পকেটে বছরে প্রায় ৪ কোটি টাকা।।BDNews.in


বিডি নিউজ ডেস্কঃ
ট্রেনের আসন, টিকিট ও দরদাম-ঢাকা থেকে জামালপুর রেলপথে প্রতিদিন পাঁচ জোড়া আন্তনগর ট্রেন চলাচল করে। এগুলো হচ্ছে তিস্তা এক্সপ্রেস, ব্রহ্মপুত্র, যমুনা, অগ্নিবীণা ও জামালপুর এক্সপ্রেস। ট্রেনগুলোতে মোট ১ হাজার ৮৭টি আসন জামালপুরের জন্য বরাদ্দ। এর মধ্যে তিস্তায় শীতাতপনিয়ন্ত্রিত (এসি) সাধারণ কামরায় আসন আছে ৫৫টি, এসি কেবিনে আসন ১২টি, সাধারণ কেবিনে আসন ১৫টি, শোভন চেয়ার ১২০টি; ব্রহ্মপুত্রে এসি আসন ৪৫টি, শোভন চেয়ার ১৪০টি; যমুনায় প্রথম শ্রেণিতে জামালপুরের জন্য আসন আছে ২২টি, কেবিনে ১৫টি, শোভন চেয়ার ৫০টি ও শোভন সাধারণ ১০৫টি; অগ্নিবীণা এক্সপ্রেসে প্রথম শ্রেণিতে ২৮টি, কেবিনে ১৫টি, শোভন চেয়ার ৫০টি ও শোভন সাধারণ ১২০টি এবং জামালপুর এক্সপ্রেসে এসি বগিতে আসন ৭০টি ও শোভন চেয়ার ২২৫টি আসন আছে।

একাধিক যাত্রী ও কালোবাজারিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এসি কামরায় একটি টিকিট ৩৬৮ টাকার জায়গায় কালোবাজারে প্রায় ৭০০ টাকায় বিক্রি হয়। এসি কেবিনে ৪৩৭ টাকার স্থলে ৭৫০, শোভন চেয়ার ১৯০ টাকার স্থলে ৪০০, প্রথম শ্রেণির টিকিট ২৫৫ টাকার স্থলে ৪৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ৫টি আন্তনগর ট্রেনের ১ হাজার ৮৭টি আসনের মধ্যে অর্ধেক টিকিট (পাঁচ শতাধিক) কালোবাজারিদের হাতে যাচ্ছে। টিকিটের দাম প্রকারভেদে দুই থেকে তিন গুণ বেশি নেন কালোবাজারিরা। তবে প্রতিটি টিকিটে গড়ে ২০০ টাকা করে বেশি নেওয়া হয়—সে হিসাব ধরে ৫৪৩টি টিকিটের বিপরীতে প্রতিদিন ৩২ লাখ টাকা এবং বছরে ৩ কোটি ৮৪ লাখ টাকা কালোবাজারিরা পকেটে পুরছেন।

জামালপুরে ট্রেনে আসনসংখ্যার তুলনায় যাত্রীর চাপ পাঁচ থেকে ছয় গুণ বেশি। ফলে এই স্টেশনে টিকিট কালোবাজারি চক্র বেশি জোরদার বলে মনে করেন যাত্রীরা। একজন কালোবাজারি ২৪ ঘণ্টায় তিন থেকে চারটি টিকিট বিক্রি করতে পারলেই ৮০০ থেকে ১ হাজার টাকা উপার্জন হয়ে যায়। ফলে অনেকেই এই পেশায় জড়িয়ে পড়ছেন।

যাত্রী সেজে এই প্রতিবেদক কথা বলেন এক কালোবাজারির সঙ্গে। ওই কালোবাজারি বলেন, স্টেশনের বেশির ভাগ কর্মকর্তা-কর্মচারী কালোবাজারির সঙ্গে জড়িত। প্রতিটি আন্তনগর ট্রেনের টিকিট নিয়ম মেনে পাঁচ দিন আগে ছাড়া হয়। কিন্তু সেই টিকিট এক ঘণ্টার মধ্যে কাউন্টার থেকে উধাও হয়ে যায়। সকালে যাঁরা লাইনে দাঁড়ান, তাঁদের বেশির ভাগই কালোবাজারি। তাঁদের সবাইকেই স্টেশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা চেনেন। সকালে কাউন্টারে টিকিট বিক্রি শুধু লোকদেখানো। বেশির ভাগ টিকিট কৌশলে স্টেশনের অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারী কেটে নিজেদের কাছে রাখেন। বিশেষ করে তিস্তা ট্রেনের টিকিট সাধারণ যাত্রীরা পান না।

শুধু এই স্টেশনেই যাত্রীদের মাসে কমপক্ষে ৩২ লাখ টাকা এবং বছরে আনুমানিক ৩ কোটি ৮৪ লাখ টাকা বাড়তি গুনতে হচ্ছে।

জামালপুর রেলস্টেশন থেকে প্রতিদিন পাঁচটি আন্তনগর ট্রেন চলাচল করে। ট্রেনগুলোতে ১ হাজার ৮৭টি আসনের জামালপুরের যাত্রীদের জন্য বরাদ্দ আছে। কিন্তু প্রতিদিন যাত্রী পাঁচ থেকে ছয় গুণ বেশি থাকে। 

জামালপুর রেলওয়ে থানার ওসি মো. গোলজার হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, পুলিশ সদস্যদের দেখলেই কালোবাজারিরা সটকে পড়েন।

সূত্রঃ প্রথম আলো

ছবি - বাধন

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ