একটা সময় ছিল রান্না করে অন্যদেরকে খাওয়ানো ছিল আমার শখ, এবং নেসা আর এখন পেশা। আমার মায়ের কাছ থেকে প্রথম শিখেছিলাম পাটিশাপটা পিঠা বানানো। অন্যান্য পিঠা আমার স্বাশুড়ির কাছ থেকে কিছু, আর নিজের চেষ্টায় বাকি সব। পরোপুরি গৃহীনি যাকে বলে সেরকমই ছিলাম। কিন্তু মনের মধ্যে সব সময় কিছু একটা করবার একটা অজানা স্বপ্ন ছিল। কিন্তু নিজেও জানতাম না কি সেটা। আমাদের ৩টি সন্তান। বড় ছেলে এ লেভেলস্্ দিবে এ বছর। মেয়েটা এবার ৬ষ্ট শ্রেণিতে পড়ে। ছোট ছেলে সারে তিন বছর। স্বামী-সন্তান-সংসার। এই ছিল জীবন, এক্টা নির্দিষ্ট ছকে বাধা।
২০১৬ তে আমাদের মেয়ের স্কুলের পিঠা উতসবে যোগ দিই। বিক্রি ভালোই হয়। ২০১৭,১৮ তে একই কাজ করি। ২০১৮ র মেলা শেষে আমরা সিদ্ধান্ত নেই অনলাইনে কিছু করবো । আমার জীবন সংগী আমাকে বলে চলো একটা ফেজবুক পেজ খুলি এবং পিঠা বিক্রি করি। আমি বললাম, তুমি টেকনিক্যাল লোক। ওইদিক টা তুমি দেখতে পারলে আমি বাকিটা পারবো। বলে রাখা ভালো তিনি একজন ক্রিয়েটিভ লোক, টেকনিক্যালি সাউন্ড। আমরা শুরু করলাম আমাদের যাত্রা। নাম দেয়া হলো “পিঠাশপ”। ২০১৯ এ প্রফেশোনালি আমরা ফেজবুক পেজের মাধ্যমে পিঠা বিক্রি শূরু করি। ২০১৯ এর মাঝামাঝি সময় আমরা আমাদের ওয়বসাইট তৈরি করি।
সেই যে বলেছিলাম কোন এক অজানা শপ্নর কথা। এটাই সেই সপ্ন এতদিনে বুঝতে পেরেছি। যেটা একদম নিজস্ব সেটার অনুভুতি আসলে ভাষায় প্রকাশ করা সম্ভব নয়।
আমাদের “পিঠাশপ” হবে একটা ব্র্যান্ড। “পিঠাশপ” একটা স্টার্টআপ কোম্পানি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হবে। আমাদের নিজস্ব ডেলিভারি সিষ্টেম থাকবে। ঢাকার বাহিরে প্রতিটি বিভাগীয় শহরে সপ্তাহে একদিন আমাদের পিঠা যাবে। এবং চিন্তা করছি ক্লাউড কিচেন সিষ্টেমে আমাদের পিঠা দেশের বাহিরে বিক্রী হবে। এগুলো আমাদের ভবিষ্যত প্ল্যান।
আমরা গত দের বছরে 400+ জন কাষ্টমারকে সার্ভ করেছি। ৩০০ র বেশি মেসেঞ্জারে কাষ্টমারদের সাথে কথা বলেছি। এর মধ্যে ৪০% রিপিট কাষ্ঠমার। প্রায় ১০,০০০ (+) পিঠা বিক্রি করেছি। এর মধ্যে ব্যক্তিগত, কর্পোরেট, বিভিন্ন অনুষ্ঠানে আমাদের পিঠা সরবরাহ করেছি। আমাদের ফেজবুক পেজে আমাদের কাষ্টমার রিভিউ দেয় বিশাল গল্প লিখে । আমাদের ওয়েব সাইটে অর্ডার বাড়ছে ।
কোয়ালিটির ব্যাপারে নো কম্প্রমাইজ এই নিতিতে বিশ্বাসি । আমাদের মোটো “আমরা তাই সরবরাহ করি যা আমরা আমদের সন্তান ও পরিবার নিশ্চিন্তে খেতে পাড়ি।”
ধন্যবাদ সবাইকে।
0 মন্তব্যসমূহ