সর্বশেষ খবর

10/recent/ticker-posts

রোজা ভঙ্গের কারণ সমূহ কি কি ?


পরহেজগারিতা অবলম্বনের অনন্য উপায় হিসেবে রমজানের রোজাকে পবিত্র কুরআনের ‘কুতিবা’ শব্দের মাধ্যমে ফরজ করা হয়েছে। ইরশাদ হয়েছে ‘লাআল্লাকুম তাত্তাকুন’। অর্থাৎ, মানুষেরা যাতে পরহেজগারিতা অর্জন করতে পারে। যথাযথভাবে রোজা পালনের মধ্যে রয়েছে মহান আল্লাহ তাআলার সন্তুষ্টি।

যেমনটি হাদিসে কুদসিতে তিনি বলেছেন, “আদম সন্তানের প্রতিটি সৎকর্ম তার জন্যই; কিন্তু রোজা ব্যতিক্রম।তা আমারই জন্য, আর আমিই তার প্রতিদান দেব।” রোজা ঢাল স্বরূপ অতএব তোমাদের কেউ যেন রোজার দিনে অশ্লীল কথাবার্তা না-বলে এবং হৈ-হুল্লোড় না-করে। আর যদি কেউ তাকে গালি-গালাজ করে অথবা তার সাথে ঝগড়া করতে এগিয়ে আসে, তবে সে যেন বলে, ‘আমি রোজা রেখেছি।’ নবীজি বলেন, ‘সেই মহান সত্তার শপথ! যাঁর হাতে আমার জীবন। নিঃসন্দেহে রোজাদারের মুখের দুর্গন্ধ আল্লাহর কাছে মেশকের সুগন্ধ অপেক্ষা বেশি প্রিয়।


বিনা-কারণে যদি কেউ এ রোজা ভঙ্গ করে, তার জন্যে রয়েছে দুনিয়া-আখিরাতে লাঞ্ছনা! তাই ইচ্ছাকৃত যদি কেউ রোজা ভঙ্গ করে, তার উপর কাজা ও কাফফারা উভয়ই ওয়াজিব হয়। আর অনিচ্ছায় বা বাধ্য হয়ে কারো রোজা ভঙ্গ করতে হলে তার ওপর কেবলই কাজা ওয়াজিব।


রোজা ভঙ্গের প্রধান তিন কারণ হলো—

১. কোনো কিছু খাওয়া,

২. কোনো কিছু পান করা ও

৩. স্ত্রী সহবাস করা।


এছাড়াও আরও কিছু কারণে রোজা ভাঙে—

ভুলে খাওয়া বা পান করার পর রোজা ভেঙে গেছে মনে করে আবার ইচ্ছাকৃতভাবে খাওয়া বা পান করা। (ফাতাওয়া শামি: ৩ / ৩৭৫)

বিড়ি-সিগারেট বা হুঁকা সেবন করা। (জাওয়াহিরুল ফিকাহ: ১ / ৩৭৮)

কাঁচা চাল, আটার খামির বা একত্রে অনেক লবণ খাওয়া। (ফাতাওয়া আল-হিন্দিয়্যা,১ / ১৯৯)

এমন কোনো বস্তু খাওয়া, যা সাধারণত খাওয়া হয় না। যেমন কাঠ, লোহা, কাগজ, পাথর, মাটি, কয়লা ইত্যাদি। (ফাতাওয়া আল-হিন্দিয়্যা: ১ / ২০২; জাওয়াহিরুল ফিকাহ: ১ / ৩৭৮)

পাথর, কাদামাটি, কঙ্কর, তুলা-সুতা, তৃণলতা, খড়কুটো ও কাগজ গিলে ফেলা। (ফাতাওয়া আল-হিন্দিয়্যা: ১ / ২০৩)

নিজের থুতু হাতে নিয়ে গিলে ফেললে। (ফাতাওয়া আল-হিন্দিয়্যা: ১ / ২০২)

ভুলে স্ত্রী সম্ভোগের পর রোজা ভেঙে গেছে মনে করে আবার স্ত্রীর সঙ্গে সহবাস সম্পর্ক করা। (ফাতাওয়া শামি: ৩ / ৩৭৫)

কানে বা নাকের ছিদ্র দিয়ে তরল ওষুধ দেওয়া। (ইমদাদুল ফাতাওয়া: ২ / ১২৭)

দাঁত দিয়ে রক্ত বের হলে যদি তা থুতুর চেয়ে পরিমাণে বেশি হয় এবং কণ্ঠনালিতে চলে যায়। (ফাতাওয়া শামি: ৩ / ৩৬৭)

মুখে পান দিয়ে ঘুমিয়ে যাওয়া এবং এ অবস্থায় সুবহে সাদিক করা। (ইমদাদুল ফাতাওয়া: ২ / ১৭২)

হস্তমৈথুন করা। (ফাতাওয়া দারুল উলুম দেওবন্দ: ৬ / ৪১৭)

রোজা স্মরণ থাকা অবস্থায় কুলি করা কিংবা নাকে পানি দেওয়ার সময় কণ্ঠনালিতে পানি চলে যাওয়া। (আহসানুল ফাতাওয়া: ৪ / ৪২৯)

কাউকে জোর-জবরদস্তি করে পানাহার করানো। (ফাতাওয়া হিন্দিয়্যা: ১ / ২০২)

রাত মনে করে সুবহে সাদিকের পর সাহরি খাওয়া। (জাওয়াহিরুল ফিকাহ: ১ / ৩৭৮)

ইচ্ছাকৃতভাবে বমি করা বা বমি আসার পর তা গিলে ফেলা। (ফাতহুল কাদির: ২ / ৩৩৭)

সূর্যাস্ত হয়ে গেছে মনে করে ভুলে দিনে ইফতার করা। (বুখারি, হাদিস: ১৯৫৯)

যদি কেউ রাত ধারণা করে স্ত্রী সহবাসে লিপ্ত হয়ে যায়, এর পর সুবহে সাদিকের কথা জানতে পেরে তৎক্ষণাৎ সহবাস থেকে বিরত হয়ে যায়। (ফাতওয়া শামি: ৩ / ৩৭৪)

বৃষ্টি বা বরফের টুকরো খাদ্যনালির ভেতরে চলে গেলে রোজা ভেঙে যায়। (ফাতাওয়া হিন্দিয়্যা: ১ / ২০৩)

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ