সর্বশেষ খবর

10/recent/ticker-posts

কর্মসংস্থান নিয়ে জটিলতায় হাজারো কওমি আলেম।।BDNews.in


বিডি নিউজ ডেস্কঃ কওমি মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের সর্বাধিক পছন্দের পেশা শিক্ষকতা। ধর্মীয় শিক্ষা-দীক্ষার কাজে লেগে থাকাকে ‘সবচেয়ে মহান পেশা’ মনে করেন তারা। সম্প্রতি এই পেশা থেকেও মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন তাদের অধিকাংশ। হাজারো তরুণ আলেম যুক্ত হচ্ছেন অন্যান্য পেশায়। এতে করে তাদের পড়তে হচ্ছে নানা জটিলতায়ও। কওমি থেকে পাস করা এই শিক্ষার্থীরা কর্মক্ষেত্রে খাপ খাওয়াতে নানান প্রতিকূলতার সম্মুখীন হচ্ছেন।

আলেমরা বলছেন, মাস্টার্স সমমান সনদ থাকলেও অংশ নিতে পারছে না কোনও সরকারি পরীক্ষায়। ইচ্ছে হলেই উচ্চশিক্ষার জন্য বাইরের কোনও দেশে যেতে পারছেন না। ফলে তাদের মসজিদ-মাদ্রাসার বাইরের কর্মস্থানে পা বাড়াতে হচ্ছে। ফ্রিল্যান্সিং, ব্যবসা, চাকরি, চাষাবাদের মতো পেশাকেও বেছে নিচ্ছেন অনেক তরুণ। কিন্তু মাদ্রাসার বর্তমান সিলেবাসে পড়াশোনা করে তারা বাইরে গিয়েও তেমন সুযোগ পাচ্ছেন না। পেলেও এমন কাজে সুযোগ পাচ্ছেন, এত কম বেতন, যা মানানসই নয়।

শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে ২০২২ সালের জানুয়ারিতে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে জানানো হয়, বাংলাদেশে মোট কওমি মাদ্রাসার সংখ্যা ১৯ হাজার ১১৯টি। এ সমস্ত মাদ্রাসা থেকে প্রতি বছর হাজার হাজার শিক্ষার্থী পড়াশোনা শেষ করে জীবিকা নির্বাহের জন্য নানান পেশায় যুক্ত হচ্ছেন।


শিক্ষকতা ছাড়ার নেপথ্যে

তরুণ আলেমদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বেশ কয়েকটি কারণে তরুণদের মধ্যে শিক্ষকতার প্রতি অনাগ্রহ তৈরি হচ্ছে। তাদের মতে, কওমি মাদ্রাসার শিক্ষকদের খাওয়া-ঘুম-গোসলসহ দিনরাতের পুরোটা সময় শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কাটাতে হয়। পরিশ্রমের তুলনায় বেতন কম হওয়ার অভিযোগ করছেন তারা।

কওমি শিক্ষার্থীদের কর্মসংস্থান তৈরিতে কাজ করে এমন বিভিন্ন সংস্থা বলছে, অধিকাংশ মহিলা মাদ্রাসা এবং নুরানি ও হিফজ বিভাগে এ সংকট প্রকট আকার ধারণ করেছে। কেন এই পেশা থেকে কওমি তরুণরা আগ্রহ হারাচ্ছেন, সেই প্রশ্নের উত্তর জানতে বেশ কয়েকজন শিক্ষক ও সদ্য পাস করা আলেমের সঙ্গে কথা বলে BDNews.in

শিক্ষকদের অভিযোগ, বেতন স্বল্পতা, মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষের অসৌজন্যতা, শিক্ষকদের অবমূল্যায়ন, শিক্ষকতার পাশাপাশি ভিন্ন কাজের সুযোগ না থাকা, তুলনামূলক অন্য পেশার চেয়ে ছুটি কম কিন্তু পরিশ্রম বেশি। বিশেষত দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে সাংসারিক ব্যয় বহন, ওষুধ-চিকিৎসা, বাবা-মায়ের সেবাযত্ন, সন্তানদের পড়ালেখা পরিচালনা ইত্যাদি কাজে হিমশিম খেতে হচ্ছে মাদ্রাসা শিক্ষকদের।

এছাড়া মহিলা মাদ্রাসা ও নুরানি-হেফজ বিভাগে শিক্ষকতাকে অপেক্ষাকৃত ছোট করে দেখার বিষয়টিও সামনে এসেছে। যার ফলে কওমি মাদ্রাসা থেকে ফারেগ (শিক্ষাসমাপ্তি) হওয়া হাজারো শিক্ষার্থী এ পেশা থেকে নিজেকে গুটিয়ে নিচ্ছেন বলে জানান তারা।

আলেমরা বলছেন, মাদ্রাসাগুলোর সুনির্দিষ্ট নীতিমালা না থাকায় অনেক সুযোগসন্ধানী পরিচালক স্বল্প বেতনে শিক্ষক খুঁজে থাকেন। বিশেষ করে মহিলা মাদ্রাসায় নারী ও পুরুষ শিক্ষকদের বেতন বর্তমান মূল্যস্ফীতির বাজারে একদমই নগণ্য।

মাদ্রাসা শিক্ষকদের আরেকটি বড় অভিযোগ হলো, ছুটি কম বা সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোতেও ছুটি কাটাতে না পারা। পরিবারের সঙ্গে সময় কাটাতে পারেন না শিক্ষকরা। মাদ্রাসায় শিক্ষকতার প্রতি অনাগ্রহের বড় কারণ এটাও। এদিকে স্বল্প বেতন হওয়ায় পরিবার কাছে রাখার সামর্থ্যও থাকে না অনেকের।

এছাড়াও শিক্ষকদের বড় একটি অংশের অভিযোগ রয়েছে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষের প্রতি। তারা বলছেন, শিক্ষক নিয়োগ, বেতন, আবাসিক ব্যবস্থাপনা, ছুটি ইত্যাদি বিষয়ে সরাসরি কোনও ‘চেইন অব কমান্ড’ না থাকায় মাদ্রাসাগুলো সুযোগ নিচ্ছে। তারা প্রতিনিয়ত শিক্ষকদের প্রতি অসৌজন্যতা দেখিয়ে আসছে, শিক্ষকদের অবমূল্যায়ন করছে। অধিকাংশ মাদ্রাসায় শিক্ষকতার পাশাপাশি ভিন্ন কাজের সুযোগ না থাকাকেও দায়ী করেন অনেকে।

তবে ভিন্নমতের কয়েকজন আলেম বলেন, ছাত্রকাল থেকেই শিক্ষকতার মানসিকতা গড়ে না উঠলে কওমি মাদ্রাসায় টিকে থাকা সম্ভব নয়। এমন মানসিকতা ছাত্রজীবনে তৈরি না হওয়ার কারণেও এ পেশার প্রতি অনেকের আগ্রহ নেই।

এ বিষয়ে কথা হয় রাজধানীর মিরপুরে অবস্থিত মাদ্রাসাতুল মারওয়াহর ভাইস প্রিন্সিপাল মাওলানা আবু বকর বিন রাশেদের সঙ্গে। তার মতে, শিক্ষকতার পাশাপাশি ভিন্ন কাজের সুযোগ দেয় অনেক প্রতিষ্ঠান। দরস-তাদরিসের পাশাপাশি তরুণ আলেমরা সম্মানজনক বিভিন্ন কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করছেন।

ভিন্ন কাজের প্রতি আগ্রহ থাকাটা খারাপ কিছু নয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এটা যুগের চাহিদা। তবে অনেক জায়গায় সুযোগের অপব্যহারও করেন শিক্ষকরা, এ কারণে কোথাও কোথাও প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে বাইরের কাজের ব্যাপারে বিধিনিষেধ থাকে। কেউ যদি আমানতের খেয়ানত না করে শতভাগ দায়িত্বশীল হয় তবে আলেম সমাজের জন্য এই সুবিধা কল্যাণজনক হবে।


সনদ ও কর্মের জটিলতা

কওমি মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের মূলধারায় নিয়ে আসতে দাওরায়ে হাদিসকে মাস্টার্সের সমমর্যাদা দেয় সরকার।‌ এরপর থেকে দাওরায়ে হাদিস পাস করলে ইসলামিক স্টাডিজ ও আরবিতে স্নাতকোত্তরের সনদ পাচ্ছেন কওমির শিক্ষার্থীরা। তবে এ সনদধারীরা সরকারি চাকরিতে যোগ দিতে পারছেন না। এক্ষেত্রে রয়েছে নানা জটিলতা। এসএসসি, এইচএসসি, স্নাতক পাস না থাকায় বিসিএসসহ অন্যান্য সরকারি চাকরির পরীক্ষাতে আবেদন করতে পারেন না কওমি শিক্ষার্থীরা। মান পেয়েও সনদের সঠিক ব্যবহার করতে না পারা নিয়ে চরম হতাশ তারা।

কওমি শিক্ষার্থীরা বলছেন, সরকার মান দিয়ে রেখেছে। কিন্তু এ মান কোনও কাজে লাগে না। এমন মান দিয়ে লাভ কী? তাদের কেউ কেউ বলছেন, আমাদের সরকারি চাকরির প্রতি এত টান নেই। তবে সরকারের উচিত শুধু স্নাতকোত্তর নয়, স্নাতক মানও দেওয়া। তাহলে শিক্ষার্থীদের সরকারি সব চাকরিতে আবেদনের সুযোগ থাকবে। সরকারের এটি নিশ্চিত করা উচিত।

যেসব চাকরির শিক্ষাগত যোগ্যতা হিসেবে স্নাতকোত্তর চাওয়া হয় সেক্ষেত্রে এসএসসি, এইচএসসি এবং স্নাতক বা এর সমমানের সার্টিফিকেট চাওয়া হয়। সেক্ষেত্রে শুধু দাওরায়ে হাদিসের সনদ দিয়ে কীভাবে সনদধারীরা সরকারি চাকরিসহ অন্যান্য চাকরি বা অনান্য সুযোগ-সুবিধা পাবেন তা নিয়ে এখনও ধোঁয়াশা কাটেনি।

তবে এ ব্যাপারে কওমি বোর্ড আল-হাইআতুল উলয়া লিল-জামি’আতিল কওমিয়া বাংলাদেশের সভা হয়েছে। এতে সরকারি চাকরিতে দাওরায়ে হাদিসের মান ও কার্যকারিতার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। এটি নিয়ে কাজ করা হচ্ছে বলে জানা গেছে।

শিক্ষার্থীরা বলছে, কওমি মাদ্রাসা শিক্ষা সনদ কার্যকরে কোনও ফলপ্রসূ উদ্যোগ না নিলে ধীরে ধীরে আমাদের এ অঙ্গনে বেকারত্বের হার বাড়বে। তাদের দাবি, কওমি সনদ দিয়ে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ধর্মশিক্ষক, মডেল মসজিদে নিয়োগ এবং সরকারি বিভিন্ন পেশায় যুক্ত হওয়ার সুযোগ তৈরি করলে প্রাইভেট প্রতিষ্ঠানেও কদর বাড়বে কওমি তরুণদের।

এ বিষয়ে কথা হয় রাজধানীর মারকাযুদ দিরাসাহ আল ইসলামিয়্যাহ মাদ্রাসার শিক্ষক মুফতি বেলায়েত হুসাইনের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘বিষয়টিতে একমত হওয়া ছাড়া উপায় নেই। কারণ পরিস্থিতি সবার সামনে স্পষ্ট। আমরা দেখছি- আমাদের সহপাঠী ও বন্ধুদের। তাদের অনেকে যথেষ্ট মেধাবী ও প্রতিভাবান। কিন্তু সে অনুযায়ী তারা কওমি মাদ্রাসায় শিক্ষকতা করেও ঠিকমতো মূল্যায়ন পাচ্ছেন না। এজন্য তারা ভিন্ন পেশায় যাচ্ছেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘ভিন্ন পেশাতে যে তারা খুব ‘সুখে’ আছেন, তাও না। সেখানে তাদের নানা পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে নিতে হচ্ছে। এর প্রভাব পড়ছে আমলে ও দৈনন্দিন জীবনযাপনে। এজন্য আমি মনে করি- কওমি পড়ুয়ারা মাদ্রাসাতেই নিরাপদ। এজন্য মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষের দায়িত্ব নিতে হবে।’

মাওলানা বেলায়েত বলেন, ‘তারা (মালিক বা পরিচালক) সবসময় নিজেরা জিততে চান। এজন্য যত কম বেতন দিয়ে পারা যায়, সাধারণ শিক্ষকদের সেটাই দেন। কিন্তু ওই শিক্ষক যখন দেখেন- তার সমবয়সী সাধারণ শিক্ষায় পাস করা বন্ধুরা তার চেয়ে কম মেধাবী হয়েও বেশি টাকা উপার্জন করছে তখন সে হীনম্মন্যতায় ভুগে এবং নিজের প্রতিই বিরক্ত হন। এভাবে একসময় আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত নিতে হয় তাকে। মানে কওমি মাদ্রাসা ছেড়ে অন্য কোনও হালাল উপার্জনের দিকে চলে যান।’

‘তবে সত্যি কথা- বাইরের যে পরিবেশ, সেখানে ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও হালালের ওপর টিকে থাকা অনেকটা অসম্ভবই বলা যায়। এজন্য যারা কওমি মাদ্রাসার মুরব্বি আছেন। তারা শিগগিরি-ই কোনও ব্যবস্থা নেবেন বলে আশা করছি।’ যোগ করেন বেলায়েত।


ভিন্ন পেশায়ও রয়েছে সম্ভাবনা

অনেকে কওমি মাদ্রাসা থেকে শিক্ষাসমাপ্ত করাদের ভিন্ন পেশায় যুক্ত হওয়াকে সাধুবাদ জানিয়ে বলছেন, মাদ্রাসা ফারেগিনরা এখন তাদের কর্মক্ষেত্রকে আরও বিস্তৃত দেখতে চায়। তারা মাদ্রাসার খেদমতের পাশাপাশি অন্য অঙ্গনেও যেতে চায়। করপোরেট চাকরি, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান, লেখালেখি, ফ্রিল্যান্সিংসহ বর্তমানে বেশকিছু পেশায় তাদের আগ্রহ বেশি দেখা যাচ্ছে।

রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে অবস্থিত একটি কিন্ডারগার্টেন মাদ্রাসার শিক্ষক মাওলানা হেদায়াতুল্লাহ বলেন, ‘আমি শিক্ষকতার পাশাপাশি ফ্রিলান্সিং করি। তাকমিল পরীক্ষার পর আমি যখন মাদ্রাসার শিক্ষকতা পেশায় যুক্ত হলাম আমার বেতন ধরা হয় মাত্র ৭ হাজার টাকা। আমি আমার প্রিন্সিপাল থেকে অনুমতি নিয়ে কম্পিউটার কিনে ফ্রিল্যান্সিং শিখি। এখন আমি শিক্ষকতার পাশাপাশি ফ্রিলান্সিং করে মাসে ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকা আয় করি।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের অভিভাবকরা দক্ষ কর্মসংস্থান তৈরির জন্য ইলম দীনের পাশাপাশি বিভিন্ন বিষয়ে আমাদের ছাত্রদের যোগ্য করে গড়ে তুললে তারা দেশ ও দশের জন্য কল্যাণ বয়ে আনবে। সর্বোপরি সে কল্যাণ হবে কওমি মাদ্রাসার।’

‘কিন্তু আমাদের দেশে এখনও মাদ্রাসার পাশাপাশি অন্য অঙ্গনে যাওয়ার মতো সুযোগ অবারিত হয়নি। সেজন্য তারা হতাশ হচ্ছেন। এখন আমাদের অঙ্গনে ২৪ ঘণ্টা মাদ্রাসায় ধরে রাখার সংস্কৃতিতে পরিবর্তন আনতে হবে। তাহলে একদিকে বেতন কম হলেও যোগ্য কিছু শিক্ষাবিদ পাওয়া যাবে, পাশাপাশি অন্য অঙ্গনে আলেমদের পদচারণায় মাদ্রাসার সীমানার বাইরের মানুষজনও যোগ্য আলেমদের সঙ্গে মেশার ও উপকৃত হওয়ার সুযোগ পাবে।’ যোগ করেন মাওলানা মাওলানা হেদায়াতুল্লাহ।


সমাধান কোন পথে

বাংলাদেশে কওমি মাদ্রাসার সর্বোচ্চ কর্তৃপক্ষ আল হাইয়াতুল উলইয়া লিল কওমিয়ার সহ-সভাপতি ও বাংলাদেশ বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়ার সহ-সভাপতি মাওলানা বাহাউদ্দিন জাকারিয়ার মতে, বড় প্রতিষ্ঠানগুলোতে বেতন নিয়ে কোনও সমস্যায় পড়তে হয় না শিক্ষকদের।

রাজধানীর কয়েকটি মাদ্রাসার নাম উল্লেখ করে তিনি বলেন, এ সকল প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের নির্দিষ্ট বেতন কাঠামো রয়েছে। কমিটি ও শুরার মাধ্যমে পরিচালিত এবং বেফাকের আওতাধীন অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানে বেতনের ব্যাপারে অভিযোগ নেই।

তার মতে, ইদানীং গড়ে ওঠা বিভিন্ন  প্রাইভেট প্রতিষ্ঠানগুলোতে অনিয়ম রয়েছে। তবে বেফাকের অধীনে না থাকায় মাদ্রাসার অভ্যন্তরীণ বিষয়ে বেফাক বা হাইয়া কোনও হস্তক্ষেপ করে না।

তিনি বলেন, আমাদের কাজ হলো মাদ্রাসাগুলোর পড়ালেখা ও পরীক্ষা সংক্রান্ত বিষয়ে তদারকি করা, আমরা সেখানে সফল। যেহেতু আমাদের বোর্ডের পক্ষ থেকে কোনও প্রতিষ্ঠানে আর্থিক অনুদান বা পরিচালনার জন্য ভাতা দেওয়া হয় না, সেহেতু আমরা তাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে খবরদারি করার অধিকার রাখি না।

তিনি বলেন, আর ছাত্রদের চাকরির দায়িত্ব বোর্ড কখনও নেয় না, এটা রাষ্ট্রের দায়িত্ব। স্কুলের একজন শিক্ষার্থীর চাকরি বা অন্যান্য বিষয় তো বোর্ড তদারকি করে না। সুতরাং এ বিষয়ে আমাদের পাশাপাশি সরকারকেও উদ্যোগী হতে হবে।

তবে সারা বাংলাদেশের ছোট-বড় কওমি মাদ্রাসা পরিচালনার জন্য নির্দিষ্ট নিয়ম ও নীতিমালা তৈরির জন্য বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া প্রস্তুতি নিচ্ছে বলেও জানান মাওলানা বাহাউদ্দিন জাকারিয়া।

কওমি মাদ্রাসাগুলোর শিক্ষক নিয়োগ, বেতন, আবাসিক ব্যবস্থাপনা, ছুটি ইত্যাদি বিষয়ে কোনও সুনির্দিষ্ট নীতিমালা নেই কেন— প্রশ্ন করা হয় আল হাইয়াতুল উলইয়া লিল কওমিয়ার উচ্চপদস্থ একজন কর্মকর্তাকে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে তিনি জানান, এ সমস্ত বিষয়ে নীতিমালা প্রণয়নের বিষয়ে আলোচনা চলছে। সকল বোর্ডের ঐকমত্য থাকলে এ বিষয়ে ভালো কোনও সিদ্ধান্ত আসতে পারে।

শিক্ষক সংকটের দায় স্বীকার করে তিনি বলেন, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে শিক্ষকের চাহিদা অনেক কিন্তু ভালো মানের শিক্ষক পাওয়া যাচ্ছে না। এ কারণে আমাদের যোগ্য ব্যক্তি ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে শিক্ষকতা পেশায় আসার মানসিকতা গড়ে তোলা প্রয়োজন। তাছাড়া জীবিকা নির্বাহের জন্য কওমি মাদ্রাসায় পড়ানো হয় না, ব্যক্তিগতভাবে অনেক ফারেগিন অন্যান্য বিষয়ে আগ্রহ দেখান। কিন্তু এ বিষয়ে সামগ্রিকভাবে কিছু করা সম্ভব নয়।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ