সর্বশেষ খবর

10/recent/ticker-posts

সকালে খালি পেটে কাঁচা রসুন খেলে কী উপকার পাওয়া যায়।।BDNews.in


বিডি নিউজ ডেস্কঃ রসুন কাঁচা খেলে সবচেয়ে বেশি উপকার পাওয়া যায়। আসলে উনুনে বা আভেনে চাপালে রসুনের মূল রাসায়নিক উপাদান অ্যালিসিন-এর গুণাগুণ নষ্ট হয়। সকালে খালি পেটে খেতে হবে এমন নয়৷ বিকেল–দুপুর বা রাতে খেতে পারেন৷ তবে খেতে হবে কাঁচা৷ সাধারণ রসুনেরই একটা কোয়া খেতে পারেন৷ তবে হাই প্রেশার বা কোলেস্টেরল থাকলে খান ৩–৪টি করে৷ এক্ষেত্রে প্রেশার বা কোলেস্টেরলের ওষুধ বন্ধ করবেন না৷ সঠিক খাবার, ব্যায়াম ও চেকআপ চালিয়ে যাবেন৷

খ্রিস্টপূর্ব ১৫০০ শতকে চিন ও ভারতে রক্ত পাতলা রাখার জন্য এর প্রচলন ছিল৷ আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞানের জনক হিপোক্রেটিস একে ব্যবহার করেছিলেন সারভাইকাল ক্যান্সারের চিকিৎসায়৷ লুই পাস্তুর এর অ্যান্টিফাংগাল ও অ্যান্টিব্যাক্টেরিয়াল গুণের খবর জানান৷ সময়ের সঙ্গে আরও উপকারের কথা জানা গেছে৷ আর আধুনিক বিজ্ঞানীরা জানালেন, হৃদরোগ প্রতিরোধে এর ভূমিকার কথা৷ ইউনিভার্সিটি অব কানেক্টিকাট স্কুল অব মেডিসিন–এর কার্ডিওভাসকুলার রিসার্চ টিমের মতে, কাঁচা রসুন খেলে হার্ট অনেক বেশি সুস্থ থাকে৷

চলুন জেনে নেওয়া যাক কাঁচা রসুন খেলে আরও কী কী উপকার মিলবে-

১. রক্তচাপ কমায়৷ চার কোয়া করে খেলে সে রক্তচাপ কমানোর ওষুধের সঙ্গেও পাল্লা দিতে পারে কিছু ক্ষেত্রে৷

২. টোটাল এবং এলডিএল কোলেস্টেরল প্রায় ১০–১৫ শতাংশ কমে যায়৷ তবে উপকারি কোলেস্টেরল বা এইচডিএল বাড়াতে ও ট্রাইগ্লিসারাইড কমাতে এর কোনও ভূমিকা নেই৷

৩. বিপাকীয় ক্রিয়া ও পরিবেশ দূষণের ফলে যে ফ্রি র‌্যাডিক্যালস তৈরি হয় তা হার্ট তথা সমস্ত শরীরের জন্য ক্ষতিকর৷ রসুনের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সেই ক্ষতি খুব ভাল ভাবে ঠেকাতে পারে৷

৪. যে সমস্ত হৃদরোগী নিয়মিত রসুন খান, তারা অনেক বেশি অ্যাকটিভ থাকেন৷

৫. অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের দৌলতে কমে অ্যালঝাইমার ও ডিমেনসিয়ার প্রকোপ৷ সংক্রমণজনিত অসুখবিসুখ কম হয়, বাড়ে আয়ু৷

৬. ইস্ট্রোজেন লেভেল বেড়ে হাড়ের স্বাস্থ্য ভাল হয় মেয়েদের৷ তবে এ নিয়ে শেষ কথা বলার সময় এখনও আসেনি৷

৭. লেড টক্সিসিটি কমাতে কাজে লাগে৷

জার্নাল অফ এগ্রিকালচারাল অ্যান্ড ফুড কেমিস্ট্রিতে প্রকাশিত প্রবন্ধে কাঁচা ও শুকনো রসুনের প্রভাব বিচার করেছেন বিজ্ঞানীরা৷ ল্যবরেটরিতে বড় হওয়া দু’দল ইঁদুরের মধ্যে এক দলকে বেশ কিছু দিন ধরে খাওয়ানো হয় টাটকা কাঁচা রসুন, আর এক দলকে শুকনো রসুন৷ এর পর তাদের মধ্যে হালকা হার্ট অ্যাটাক সৃষ্টি করিয়ে বিজ্ঞানীরা দেখেন, কোন গ্রুপের ইঁদুর কী ভাবে সামলাচ্ছে এর ধাক্কা৷ দেখা যায়, হার্ট অ্যাটাকের ফলে অক্সিজেনের অভাবে হার্টের পেশির যে ক্ষতি হয়েছে, দু’দল ইঁদুরই তা সামলেছে প্রায় একই রকম দক্ষতায়৷ তবে যারা কাঁচা রসুন খেয়েছিল, এই বিপর্যয়ের পরেও তাদের হার্টের মূল ধমণী দিয়ে রক্ত সঞ্চালন বেশি ভাল ভাবে হয়েছে ও হার্টের মধ্যে এমন কিছু পরিবর্তন হয়েছে যাতে চট করে রোগের ধকল সামলে উঠেছে তারা৷ এ ব্যাপারে মানুষের ওপর পরীক্ষা এখনও না হলেও মোটামুটি নিশ্চিত করে বলা যায়, কাঁচা রসুনের যত উপকার, প্রক্রিয়াকরণের পরে আর তত থাকে না৷

রসুনের অপকারিতা ও সতর্কবার্তা:

১/ রসুন যত উপকার ততটা ক্ষতিকর। দিনে দুই কোয়ার বেশি কাঁচা রসুন খাওয়া যাবে না। রান্নায় এটি ব্যবহার হলেও দিনে মাত্র দুই কোয়া রসুন ব্যবহার করতে হবে। যাদের রসুন খাওয়ার ফলে এলার্জি হবার আশঙ্কা থাকে বা হয় তাদেরকে অবশ্যই কাঁচা রসুন খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।

২/ যাদের রসুন খাওয়ার ফলে মাথা ব্যথার সমস্যা হয়, বমির প্রাদুর্ভাব হয় বা অন্য কোনো সমস্যা দেখা দেয়, তাদের জন্য কাঁচা রসুন না খাওয়াই ভাল। আবার অতিরিক্ত খেলে নিঃশ্বাসে দুর্গন্ধ হতেও পারে তাই বেশি রসুন খাওয়া ঠিক নয়।

৩/ অনেকের শরীর থেকে রক্তপাত সহজে বন্ধ হয় না, অতিরিক্ত রসুন খাওয়া তাদের জন্য বিপদজনক। কারণ, রসুন রক্তের জমাট বাঁধার ক্রিয়াকে বাধা প্রদান করে। ফলে রক্তপাত বন্ধ হতে অসুবিধা হতে পারে। এসব ক্ষেত্রে অতিরিক্ত রসুন না খাওয়াই উত্তম।

৪/ রসুন খাওয়ার ফলে পাকস্থলীতে অস্বস্তি বোধ করলে রসুন খাওয়া বন্ধ রাখতে হবে।

৫/ শিশুকে দুগ্ধদানকারী মায়েদের রসুন না খাওয়াই ভাল। কারণ রসুন খাওয়ার ফলে তা মায়ের দুধের মাধ্যমে শিশুরপাকস্থলীতে ঢুকে শিশুর যন্ত্রণার কারণ ঘটাতে পারে।

৬/ অনেকের রসুনের গন্ধ সহ্য হয় না। এখন রসুনকে ওষধের বড়ি হিসেবে তৈরি করার জন্য তাদের সুপারিশ করা হয়েছে।

৭/ রসুন নরম হয়ে গেলে বা সবুজ রঙ দেখা দিলে সেই রসুন কিনবেন না। কারণ এসব রসুনের কার্যগুণ নষ্ট হয়ে যায়। কেনার সময় মাঝারি আকারের রসুন কিনতে হবে।

৮/ রসুন বন্ধ পাত্রে না রেখে খোলা পাত্রে রাখা ভাল। ভুলেও রেফ্রিজারেটরে রসুন রাখবেন না। এতে করে রসুন নরম হয়ে যাবে। নরম রসুন স্বাস্থ্যকর নয়। ভাঁজার জন্য বা কারী পেস্টের জন্য রসুন ব্যবহার করা হয়ে থাকে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ