ওখানে লালনের মাজারের চারিদিক ঘুরবে। লালনের একতারা হাতে প্রতি কৃতির পাশে বসবে এবং ভাববে। ভাব জগতেই আমায় পাবে আর মাজারের ওই সাদা চুনকামে চোখ রাখলে আমায় দেখবে, উপরের গম্বুজে দেখো আমার হাত।
লালনের এই ১৩৩ তম তিরোধান লেখা ব্যানার উঁচিয়ে আছে। ব্যানারে আরো লেখা রয়েছে, তার অন্তিম যাবার সময়। কাল খন দিন, তার মুখের বাণী।
১১৬ বছর বয়সী লালন, ১৮৯০ইং সালের, ১৭ই অক্টোবর, ১২৯৭বাং সালের ১কাত্তিক, শুক্রবার ভোর, গুরু শিষ্যদের কন্ঠের, পার করো হে দয়াল চাঁদ আমারে ...ক্ষম হে অপরাধ আমার ভাব কারাগারে ...গান শেষ, লালনের ইহলোক আত্মা কামনাও শেষ।
আমাকে যখন পাবে বলে মনে এক ঝলক দোলা আসবে। চলে যাবে ফুলের ঝোপড়ায়। কত ফুল লালন শাহে, দোল পূর্ণিমায় দোল খাই। লাল নীল সবুজ হলুদ বেগুনী। ওখানে ঝাঁক বেঁধে, ঝাকে ঝাকে, দলে দলে, লালন অনুসারী, লালনের গানে গানে দেখো ভাসছে। হাসছে। গাচ্ছে। জাতপাত ভুলে নারী পুরুষ।
'সত্য বল সুপথে চল ওরে আমার মন ।'
'বাড়ির পাশে আরশি নগর, সেথা এক পড়শী বসত করে। আমি একদিনও, না দেখলাম তারে।'
'একটা বদ হওয়া লেগে খাতায় পাখি কখন জানি উড়ে যায়।'
আরো প্রভৃতি গানের স্রোতে লালন প্রাঙ্গণ সার্ফ ফুয়ারার মতো লাগবে। ওই সমাগমে আমার তুমি খুঁজবে, জানবে, বুঝবে। মানবে এবং রাখবে। তোমাকে করবে উত্তাল তোমাকে করবে উচ্ছ্বাস। তার মধ্যেই দেখো আমার বিশ্বাস।
সারাদিন লালন একাডেমি চত্বর ঘুরে। সন্ধ্যার পরে লালন কমপ্লেক্স লালন একাডেমির স্টেডিয়ামে ঢুকবে। সাংস্কৃতিক মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় এবং পৃষ্ঠপোষকতায়, লালন একাডেমীর সার্বিক তত্ত্বাবধানে করা গানের অনুষ্ঠান দেখবে। জেলা প্রশাসকের সভাপতিত্বে সেই অনুষ্ঠান মহিমান্বিত হবে।
তুমি বসবে একটি কোনাই ভাবের চেয়ার টেনে, আমিও তোমারই পাশে আছি জানবে মনে মনে।
কলমে: সৈয়দা রাশিদা বারী
0 মন্তব্যসমূহ