সর্বশেষ খবর

10/recent/ticker-posts

প্রসাধনী পণ্য উৎপাদন ও বাজারজাতকরণে দেশে শীর্ষস্থানে রয়েছে ম্যারিকো।।BDNews.in


বিডি নিউজ ডেস্কঃ নারিকেল তেলসহ বিভিন্ন ধরনের প্রসাধনী পণ্য উৎপাদন ও বাজারজাতকরণে দেশে শীর্ষস্থানে রয়েছে ভারতীয় ম্যারিকো লিমিটেডের সাবসিডিয়ারি ম্যারিকো বাংলাদেশ লিমিটেড। কোম্পানিটির উৎপাদিত পণ্যগুলোর চাহিদা প্রতি বছরই আকর্ষণীয় হারে বাড়ছে। সেই সঙ্গে বাড়ছে নিট মুনাফাও। এর ফলে এক দশকের ব্যবধানে কোম্পানিটির আয় বেড়েছে দ্বিগুণেরও বেশি। এ সময়ে কোম্পানিটির নিট মুনাফা বেড়েছে ৩৫০ শতাংশ।

আয় ও মুনাফা বৃদ্ধির ধারাবাহিকতায় চলতি ২০২৩-২৪ হিসাববছরের প্রথম প্রান্তিকেও ভালো প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে এফএমসিজি খাতে দেশের শীর্ষস্থানীয় কোম্পানি ম্যারিকোর। চলতি প্রথম প্রান্তিকে (এপ্রিল-জুন) পণ্য বিক্রি থেকে কোম্পানিটির আয় বেড়েছে ৮ দশমিক ৮ শতাংশ। তবে উৎপাদন ব্যয় কমিয়ে আনায় নিট মুনাফা বেড়েছে ২৯ শতাংশ।

নারিকেল তেল ও ভ্যালু অ্যাডেড হেয়ার অয়েলে দেশে এক নম্বর অবস্থানে রয়েছে ম্যারিকো। বর্তমানে দেশে প্রায় ৯০ শতাংশ পরিবার ম্যারিকোর পণ্য ব্যবহার করছে। প্রতি বছরই ম্যারিকোর পণ্য বিক্রি থেকে আয় ও মুনাফা বাড়ছে। পর্যালোচনায় দেখা যায়, ২০১২-১৩ হিসাববছরে পণ্য বিক্রি থেকে ম্যারিকোর আয় ছিল ৬১২ কোটি টাকা, যা ২০২২-২৩ হিসাববছরে ১ হাজার ৪১৪ কোটি টাকায় উন্নীত হয়েছে। এক দশকে কোম্পানির আয় বেড়েছে ১৩১ শতাংশ। গত এক দশকে কোম্পানিটির নিট মুনাফা ৮৬ কোটি টাকা থেকে ৩৮৭ কোটি টাকায় উন্নীত হয়েছে। ২০১২-১৩ হিসাববছরে নিট প্রফিট মার্জিন ছিল ১৪ শতাংশ, যা ২০২২-২৩ হিসাববছরে ২৭ শতাংশ ছাড়িয়ে গেছে। এক দশক আগে শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) ছিল ২৭ টাকা, যা সর্বশেষ ২০২২-২৩ হিসাববছরে ১২২ টাকা ৯৩ পয়সায় উন্নীত হয়েছে।

কোম্পানিটির বিক্রি থেকে মোট আয়ের প্রায় ৬১ শতাংশ আসে প্যারাস্যুট ব্র্যান্ডের নারিকেল তেল থেকে। এ ছাড়া আয়ের প্রায় ২৯ শতাংশ আসে প্যারাস্যুট অ্যাডভান্সড ও নিহার ন্যাচারালস হেয়ার অয়েল থেকে। একটি পণ্যের ওপর অতিমাত্রায় নির্ভরশীলতা কমাতে কোম্পানিটি পণ্য উৎপাদনে বৈচিত্র্যতা আনছে। এরই অংশ হিসেবে শ্যাম্পু, ফেসওয়াশ, হেয়ার জেলের মতো পুরুষদের জন্য বিভিন্ন ধরনের প্রসাধনীসামগ্রী উৎপাদন করছে। আয়ের ৪ শতাংশ আসে হেলথ অ্যান্ড বিউটি খাত থেকে। প্রতি বছরই কোম্পানিটির পণ্য বিক্রিতে বড় ধরনের প্রবৃদ্ধি দেখা যাচ্ছে। বর্তমানে কোম্পানিটি যেসব পণ্য বিক্রি করে, তার ৯৯ শতাংশই স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত। বাংলাদেশের চাহিদা মিটিয়ে কিছু পণ্য রপ্তানিও করছে।

এদিকে চলতি ২০২৩-২৪ হিসাববছরের প্রথম প্রান্তিকেও ম্যারিকোর আয় ও মুনাফা উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে। এ সময় পণ্য বিক্রি করে কোম্পানিটির আয় হয়েছে ৩৯৬ কোটি ২১ লাখ টাকা, যা আগের বছরের একই সময়ে ছিল ৩৬৪ কোটি ৬৫ লাখ টাকা। আয় বাড়ানোর পাশাপাশি এ সময় উৎপাদন ব্যয়ও কমিয়ে এনেছে।

২০২১-২২ হিসাববছরের প্রথম প্রান্তিকে ম্যারিকো বাংলাদেশের উৎপাদন ব্যয় ছিল মোট বিক্রির ৪৭ দশমিক ৮২ শতাংশ, যা চলতি হিসাববছরের প্রথম প্রান্তিকে ৪১ দশমিক ৭৮ শতাংশে নেমে এসেছে। এতে করে চলতি প্রথম প্রান্তিকে কোম্পানির মোট মুনাফা হয়েছে ২৩০ কোটি ৬৬ লাখ টাকা, যা আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে ২১ শতাংশ বেশি। প্রশাসনিক, বিক্রয় ও বিপণন ব্যয় সমন্বয়ের পর পরিচালন মুনাফা দাঁড়িয়েছে ১৭৪ কোটি টাকা, যা আগের বছরের একই সময়ে ছিল ১৩৮ কোটি টাকা। মুনাফায় কর্মীর হিস্যা ও কর পরিশোধের পর চলতি প্রথম প্রান্তিকে ম্যারিকোর নিট মুনাফা হয় ১৩২ কোটি ৮৭ লাখ টাকা, যা আগের বছরের একই সময়ে ছিল ১০২ কোটি ৯০ লাখ টাকা।

ম্যারিকো সূত্র জানিয়েছে, বর্তমানে তাদের পণ্যের যে চাহিদা রয়েছে, বর্তমান উৎপাদন সক্ষমতা দিয়ে তা ২০২৩ সালের পর মেটানো যাবে না। তাই পণ্য চাহিদা বিবেচনায় ২০২০ সালের অক্টোবরে নতুন বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত নেয় কোম্পানিটি। সে সময় বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের (বেজা) অধীন চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে কারখানা স্থাপনের মাধ্যমে ২২৭ কোটি টাকা বিনিয়োগের ঘোষণা দেয় ম্যারিকো কর্তৃপক্ষ।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ