পানির উৎস না থাকা এবং বৃষ্টি না হওয়ায় বিপাকে পড়েছেন কৃষকও। কুষ্টিয়ায় টানা তীব্র তাপদাহে হাঁসফাঁস অবস্থা জনজীবনে। নদী কিংবা খাল-বিল বা জলাশয় প্রায় পানি শূন্য হয়ে পড়েছে। পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায় টিউবয়েলেও মিলছে না পানি। এতে দুর্বিসহ হয়ে উঠেছে জনজীবন। সুপেয় পানির সংকট দেখা দেওয়ায় বিপাকে পড়েছেন সাধারণ মানুষ। তাপদাহ বাড়ার সাথে সাথে সূর্যের আলো থেকে যেন আগুনের ফুলকি বের হচ্ছে।
আর সেই তেজে পুড়ছে সব কিছু। সপ্তাহ ধরে জেলায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪১ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ওপরে অবস্থান করছে। বৃষ্টির অভাবে আবাদী জমি ফেটে চৌচির অবস্থায় পড়ে রয়েছে। তাপদাহে পানি শুন্য হয়ে পড়ছে পদ্মা, গড়াই। জিকে সেচ প্রকল্পের পাম্প মেশিন নষ্ট থাকায় প্রকল্পের খালগুলো পানিশূন্য। এতে প্রভাব পড়েছে কৃষকের ক্ষেতে। বিশেষ করে বোরোধান চাষীদের দুশ্চিন্তা বেশি। পানির উৎস না থাকা ও বৃষ্টি না হওয়ায় চিটা হচ্ছে ধানে, পুড়ছে ভুট্টা, বাদাম ও আখসহ সবজি ক্ষেত। বিনিয়োগ করে বিপাকে কৃষককুল। একই অবস্থা কৃষি খামারেও। কৃষিবিদরা বলছেন, গরম অব্যাহত থাকলে বোরো আবাদের বিপর্যয় হতে পারে। বিশেষ করে ধানে চিটা বাড়তে পারে।
এ জন্য স্যালো ইঞ্জিন চালিত পানির পাম্পগুলো মাটি খুঁড়ে গভীরে বসানোর পরামর্শ দিয়েছেন কৃষিবিদ সৌতম কুমার শীল। একই অবস্থা জেলার সর্বত্র। সুপেয় পানির সংকট চরম দেখা দেওয়ায় ভোগান্তিতে মানুষ। টিউবয়েলের পানি না পাওয়ায় সাবমারসিবল পাম্প বসিয়ে পানি সরবরাহের চেষ্টা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন সাইদুর রহমান নামে এক ব্যক্তি।
জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগের সহকারী প্রকৌশরী মো. আলমগীর হোসেন জানান, গত কয়েক বছর ধরে ওয়াটার টেবিলের লেয়ার নিম্নমুখী। গত বছর পানির স্থিতিতল ছিল ৩২ ফুট। এবছর তা নেমে দাড়িয়েছে ৩৫ থেকে ৩৬ ফুট। বৃষ্টি হলে সমস্যা দূর হবে। এদিকে কুষ্টিয়া আবহাওয়া দপ্তরের পর্যবেক্ষক মো. বজলুর রহমান জানিয়েছেন জেলায় তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেয়েছে। বৃষ্টি না পর্যন্ত অস্বস্থিকর পরিবেশ থেকে মুক্তি মিলবেনা। ভূগর্ভস্থ পানির যত্রতত্র ব্যবহারের কারণেই এমন অবস্থা। বৃষ্টি না হলে তাপদাহ থেকে সৃষ্ট সমস্যা কাটবে না বলে মনে করছেন পরিবেশবিদ ও বিশেষজ্ঞরা।
0 মন্তব্যসমূহ