গল্পের প্রধান চরিত্র সিলভিয়া। সিলভিয়ার সৌন্দর্য সকাল বেলার মত তাতে কোন অস্পষ্টতার মোহ নেই, সমস্তটাই বুদ্ধিতে পরিব্যপ্ত। তার মধ্যে কেবল বেদনা বইবার শক্তিই নয়, একি সাথে আছে মনের শক্তি।
গল্পের নায়ক শিমুল এক অভিজাত পরিবারের মার্জিত সাহিত্য মনা এক ব্যক্তিত্ব। কাকতালীয়ভাবে সিলভিয়া এবং শিমুলের পথ একসময় একপথে মিশে যায়। অল্পদিনের জন্যই কিন্তু তার পরিব্যপ্তি সারা জীবন বয়ে চলে। একসাথে পথ চলা, প্রকৃতি দেখা, মনের চিন্তা চেতনার সমতা এইসবই সম্পর্ককে বাঁধে এক কঠিন বাঁধনে। যা ছেড়ে গেলেও রয়ে যায়।
সুন্দর একটি প্রেমের গল্প হিসেবে এই গল্পটি শেষ হতে পারত। কিন্তু পাঠকের সেই প্রত্যাশা মাটিচাপা দিয়ে গল্প মোর নেয় ভিন্ন গতিতে। নয়ন আর লাবনী নামক দুটি চরিত্র ছিল প্রথম থেকেই । এর সাথে যুক্ত হয় আরো দুটি চরিত্র। হিয়া আর প্রতিম।
সেন্সেটিভ মনের মেয়ে সিলভিয়া সারাজীবন নিজেকে খুঁজেছে। জীবনযাত্রার পথে পথে নারীকে যে কতবার মরতে হয় সিলভিয়ার চরিত্রে তারই কিছু চিত্র আঁকা পুরো উপন্যাস জুড়ে।
ভালোবাসা এক উপলব্ধির নাম। এক বোধের নাম। যা বেঁচে রয় নিজের মনে। জীবনের পথে পথে থাকে নানা প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তির অনুরণন। তারমধ্যে কিছু পাওয়া অর্ন্তরলোক দখল করে রাখে। যা চাইলেও দূর করা যায় না। এই গল্পে সিলভিয়া পারেনি। পারেনি তার হৃদয়ের স্পর্শ পাওয়া শিমুল।
কিছু মানুষকে পার্থিব পাওয়ায় টানে না। তারা যা পেতে চায় তা নিজের কাছ থেকেই তা পেতে চায়। এর বাইরেও সভ্যতার এক দায় থাকে। কিছু বিষয় কম্প্রোইজ করা যায় না। সূক্ষ্ম রুচিবোধের মানুষেরা কখনও তা পারে না। তাই হৃদয় জোড়া ভালবাসা নিয়েও একসঙ্গে থাকা এই মানুষদের হয় না।
শিমুল -সিলভিয়ার হৃদয়ের তেমনি এক উজান গঙ্গা অভ্রান্ত বোধ এর প্রেক্ষাপট। এ গল্প মনস্তত্ত্বাত্বিক লড়াইয়ের। এ গল্প নিজের সাথে বোঝাপড়ার। এ গল্প ভালোবাসা বোধের। নিজেকে খোঁজার গল্প।
অসাধারণ মৌলিক এক গল্প অভ্রান্ত বোধ উপন্যাস। এই উপন্যাসে অসাধারণ কাব্য আছে। আছে চিন্তা প্রবাহ আর সাবলীল বর্ণনা এবং গল্প।
![]() |
লেখকঃ শিরিন শবনম |
লেখক শিরিন শবনমের জন্ম দ্বীপশহর ভোলা জেলায়। সেখানেই বেড়ে ওঠা, সেখানেই লেখাপড়া। বিয়ে পরবর্তী জীবনের প্রয়োজনে ঢাকায় সেটেলড। কর্পোরেট ক্যারিয়ারে দীর্ঘ জীবন কাটানো পড়ুয়া শিরিন শবনমের লেখার হাতেখড়ি কোভিডকালীন ঘরবন্দি সময়ে।
ব্যক্তি জীবনে শিরিন শবনম দুই কন্যার জননী। অনেক গল্প কবিতা প্রবন্ধ লিখলেও 'অভ্রান্ত বোধ' তার প্রথম মুদ্রিত উপন্যাস। নিজের মনে ডুবে থাকতে পছন্দ করা শিরিন শবনম সাহিত্যকে নিজের মধ্যে ধারণ করেন। সেই মননের ফলশ্রুতি তার এই লেখালেখির জগত।
২০২৩ এর বই মেলাতে প্রকাশিত হয়েছে জনপ্রিয় কথাসাহিত্যিক শিরিন শবনমের নতুন সামাজিক উপন্যাস 'অভ্রান্ত বোধ'!
2 মন্তব্যসমূহ
অসাধারণ লাগল প্রোলগ পড়ে। ভিন্ন ধারার গল্প যেখানে নিজের মূল্যবোধ অক্ষুন্ন রাখার চেষ্টা প্রতিয়মান।
উত্তরমুছুনআপনার মূল্যবান মতামত প্রকাশ করার জন্য আপনাকে জানাই অসংখ্য ধন্যবাদ।
মুছুন