সর্বশেষ খবর

10/recent/ticker-posts

স্কুল প্রতিষ্ঠা ২০১০ সালে, শিক্ষক নিয়োগ ২০০৭ সালে।।BDNews.in


বিডি নিউজ ডেস্কঃ যে স্কুলের কোনো অস্তিত্ব নেই, অথচ সেই স্কুলে নিয়োগ পেয়েছেন প্রধান শিক্ষক পদে, এমন এক ভৌতিক নিয়োগ নিয়ে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে ঝিনাইদহ জেলার হরিণাকুণ্ডু উপজেলার শিক্ষা অফিসে। এ নিয়ে সর্বত্রই চলছে আলোচনা-সমালোচনার ঝড়। ওই সময় স্কুলই প্রতিষ্ঠা হয়নি অথচ নিয়োগ নিয়ে দিব্যি চাকরি করে যাচ্ছেন শাহনাজ পারভীন শেফালী নামে এক শিক্ষক। 

তিনি হরিণাকুণ্ডু উপজেলার চাঁদপুর পশ্চিমপাড়ার আসমত বিশ্বাসের মেয়ে। দুর্নীতি দমন কমিশনের মহাপরিচালক বরাবর পাঠানো এক লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, ঝিনাইদহের হরিণাকুণ্ডু উপজেলার চাঁদপুর জোয়ারদার পাড়ায় ২০১০ সালের ২২শে ডিসেম্বর একটি বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা হয়।

তিন বছর পর ২০১৩ সালে স্কুলটি জাতীয়করণ করা হয়। অথচ স্কুল প্রতিষ্ঠার তিন বছর আগেই ২০০৭ সালে একটি জালিয়াতিপূর্ণ নিয়োগ নিয়ে চাকরি করে যাচ্ছেন শাহনাজ পারভীন শেফালী। নিয়মিত তিনি স্কুলের ক্লাস নিচ্ছেন, কোনো বাধা ছাড়াই তুলছেন সরকারি বেতন ভাতা, ভোগ করছেন সরকারি সকল সুবিধা। লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, ২০১০ সালে স্কুল প্রতিষ্ঠার সময় শাহনাজ পারভীন শেফালীর বয়স ছিল ৩২ বছর। ফলে এ সময়ে তার চাকরি হওয়ার কথা নয়।

তার জন্ম ১৯৭৮ সালের ২৪শে জুলাই। অভিযোগে বলা হয়েছে, বয়স জালিয়াতি করার জন্যই শাহনাজ পারভীন শেফালী স্কুল প্রতিষ্ঠার তিন বছর আগের ভুয়া নিয়োগ ও রেজুলেশন দেখাচ্ছেন। স্কুলের প্রধান শিক্ষক মোস্তাফিজুর রহমান মুকুল জানান, স্কুলের রেজিস্ট্রেশন করা হয় ২০১০ সালের ২২শে ডিসেম্বর। ওই তারিখেই স্কুলটির প্রতিষ্ঠার দিন দেখানো হয়।

স্কুলের শিক্ষকদের যোগদানের তারিখ যথাক্রমে ২০১০ সালের ২৭শে ডিসেম্বর ও ২০১১ সালের ৪ঠা সেপ্টেম্বর। ফলে ২০০৭ সালের নিয়োগ সম্পূর্ণ ভুয়া ও অগ্রহণযোগ্য বলে মনে করছেন স্কুলের কর্মকর্তা, কর্মচারী ও এলাকাবাসী। স্কুলটির তৎকালীন সভাপতি দেখানো হয়েছে নুরু মিয়া নামে একজনকে। কিন্তু ওই গ্রামে নুরুল ইসলাম জোয়ার্দার নামে এক ব্যক্তি আছেন। তিনি জানান, ২০০৭ সালে চাঁদপুর জোয়ারদার পাড়ায় সরকারি বা বেসরকারি স্কুলের কোনো অস্তিত্ব ছিল না। তাছাড়া শিক্ষক নিয়োগ তো দূরের কথা, আমি কোনোদিন কোনো স্কুলের সভাপতিও ছিলাম না। 

তিনি আরও জানান, ২০১০ সালে স্কুলটি প্রতিষ্ঠা করার পর ফজলুর রহমান মালিতাকে সভাপতি করা হয় এবং তিনিই শিক্ষক নিয়োগ দেন। এ ব্যাপারে হরিণাকুণ্ডু উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার আব্দুর রহমান লিখিত অভিযোগের মাধ্যমে খবর নিশ্চিত করে জানান, চাঁদপুর জোয়ারদার পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক শাহনাজ পারভীন শেফালীর বিরুদ্ধে জেলা শিক্ষা অফিসে লিখিত অভিযোগ দেয়া হয়েছে। অভিযোগের প্রেক্ষিতে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত কমিটি এ বিষয়ে তদন্তের মাধ্যমে কাগজপত্র বাছাই করে যদি কোনো অনিয়ম ধরা পড়ে তাহলে তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ