কারণ পুস্পকে সে এক যুগের বেশী চেনে!পুস্পের মতো ভীতু মেয়ে?অসম্ভব?যে কিনা নিজের শহরই ভালো চেনেনা!
পুস্পকে চামেলি চেপে ধরলো,"প্রেমে পড়েছিস সত্যি করে বল"!
পুস্প প্রেমে পড়েছে কিনা জানেনা! তবে এটা সত্যি পুস্প সাহসী হয়েছে!
পুস্প সত্যিই সদরঘাটের পথ চিনেনা! সে সিএনজি তে অনিশ্চিত ভাবে বসে ছিল! সিএনজি ওয়ালা যদি অন্য কোথাও পুস্পকে নিয়ে চলে যেতো তবে পুস্পের কিছুই করবার ছিলনা! পুস্প ভয় কাটাতেই ঐদিন সিএনজি ওয়ালার সাথে দুনিয়ার গল্প করেছে!
তবে এটা সত্যিকারের সত্যি যে পুস্প সত্যিই সাহসী হয়েছে!কিন্তু এখন আর সাহসীপনা দেখিয়ে কোন লাভ নেই! আহা পুস্প যদি কলেজে পড়তে একটু সাহসীপনা দেখাতে পারতো! পারেনি! বড় আফসোস!
পুস্প বাবুসাহেবের কাছে বুড়িগঙ্গার উপরে বিশাল বজরায় তাঁর বিয়ের প্রথম রাত্রি যাপনের গল্প শুনেছিল! শুনে সে দারুণ এক্সাইটেড হয়েছিল!
পুস্পের তখন মনে হয়েছিল এমন সুন্দর রোমান্টিক ব্যাপার পৃথিবীতে আর একটাও নেই! সে গল্পকার হলে নিশ্চয়ই একটা গল্প লিখে ফেলতো!
তবুও পুস্প গল্প লিখতে বসেছিল!গল্প লিখতে গিয়ে পুস্প বুঝি নিজের অজান্তে বউটার জায়গায় নিজেকেই কল্পনা করছিলো! পুস্প কি তবে ঐরকম চমৎকার একটা রাতের জন্য লোভ করেছিল? পুস্প বুঝি লোভী হয়েছিল!
ঈশ্বরের কাছে লাখো শুকরিয়া! অপ্রত্যাশিত ভাবে সেইরকম একটা রাত পুস্প পেয়ে গেছে! কি চমৎকার ছিলো সেই রাত!
এটা কিন্তু পাবার কথা ছিলনা! কিভাবে কি হল পুস্প জানেনা! পুস্প শুধু জানে এটা ঈশ্বর চেয়েছেন জন্যই হয়েছে! তা না হলে অসম্ভব ছিল!
তাছাড়া বহুদিন আগে চক্রবর্তী দাদু পুস্পকে বলেছিলেন,"দিদিভাই শোন,যার স্পর্শে শরীরে হাজার তারা ফুটে উঠবে সে-ই তো সত্যিকারের ভালবাসার মানুষ গো"!
পুস্পের নিষিদ্ধ লোভী মনটা বুঝি ঈশ্বর বুঝে গিয়েছিল!
এখন রাত ৩টা!
পুস্পের শরীরটা বেশ খারাপ! এখন যদি পুস্প মরে যায় কেউ দেখবারও নেই! কিন্তু পুস্পের মনটা বেশ ফুরফুরা! কারণ চোখ বন্ধ করলেই পুস্প সেই চমৎকার রাত্রি দেখতে পায়!পুস্প মনে মনে শিহরিত হয়!
তাঁর বুকের মধ্যে বিড়ালের মতো গুটিশুটি মেরে নিশ্চিত ঘুম!
কতদিন পুস্প নিশ্চিন্তে ঘুমায় না তা সে ভুলেই গিয়েছিল! ঐদিন ঘুমিয়েছে আহা কি শান্তির ঘুম! অবশ্য ঘুম ভেঙে পুস্পের নিজের মাথার চুল নিজেরই টেনে ছিঁড়তে ইচ্ছে করছিল! কেন সে ঘুমিয়ে গেলো! বাকি রাতটুকু কেন সে জেগে থাকলো না!এমন রাত সে আর পাবে? পাবেনা! আর কোনদিনই পাবেনা!
অনেক মেয়েরাই বুকে ঘুমুতে পছন্দ করেনা! কিন্তু পুস্প করে!খুব পছন্দ করে! কিন্তু সে এটা পায়না!
অসম্ভব মমতায় তার একহাত দিয়ে পুস্পকে জড়িয়ে রেখেছিল বাবুসাহেব! কই গোবিন্দ তো ওমন করে বুকের মধ্যে মমতায়, ভালবাসায় জড়িয়ে রাখেনা!পুস্প তো এইটুকুই চায়!
পুস্পের মনে সবসময় ঐ ভালো লাগার রেশটা থাকে! পুস্প সহজে আর কোনকিছুতেই মন খারাপ করে না!
সাধারণ মেয়ে পুস্প একজীবনে অনেক কিছু পেয়ে গেছে! আর সে কিচ্ছু চায়না! তার আর কিচ্ছু চাইবার নেই!
ঐ এক ভাললাগা নিয়ে পুস্প বাকী জীবন কাটাতে পারবে!
পুস্প আর লোভও করেনা!
তবে মাঝে মাঝে পুস্পের অভিমান হয়,তীব্র কষ্ট হয়! এই কষ্টের কারণ পুস্প জানেনা! তবু তার কষ্ট হয়! অবশ্য এই অভিমান বা কষ্ট পুস্প কাউকে বুঝতেও দেয়না! দিবেও না কোনদিন!পুস্প খুব যত্ন করে লুকিয়ে রাখে!
1 মন্তব্যসমূহ
মাশাল্লাহ
উত্তরমুছুন