সর্বশেষ খবর

10/recent/ticker-posts

কুমারখালী শহীদ গোলাম কিবরিয়া সেতুতে বেড়েছে বখাটেদের উৎপাত।।BDNews.in


বিডি নিউজ ডেস্কঃ কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার শহীদ গোলাম কিবরিয়া সেতুতে পরিবার-পরিজন, বন্ধু-বান্ধবীকে সঙ্গে নিয়ে অনেকেই সেতুতে ঘুরতে আসে। শহীদ গোলাম কিবরিয়া সেতু প্রায় ৯০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত ৬৫০ মিটার দৈর্ঘ্যের এই সেতুতে সংযোগ সড়ক আছে ৫৫০ মিটার।

গড়াই নদের তীর ঘেঁষে কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার অবস্থান। নদটি উপজেলাকে দুই ভাগে ভাগ করে রেখেছে। ১১টি ইউনিয়নের মধ্যে ছয়টি নদের এপারে (উত্তর) আর পাঁচটি ওপারে (দক্ষিণ)। যদুবয়রা, পান্টি, চাঁদপুর, বাগুলাট ও চাপড়া নামে পাঁচটি ইউনিয়নের মানুষেরা উপজেলা সদরের যোগাযোগ আগে বেশ কঠিন ছিল। ঘাটে এসে নৌকার জন্য অপেক্ষায় থাকা লাগবে না। বৃষ্টি, ঝড় ও রোদে পুড়তে হবে না। কৃষিপণ্য আনা-নেওয়া সহজ হবে। বিশেষ করে অসুস্থ মানুষের হাসপাতালে পৌঁছানোর জন্য বেগ পেতে হবে না। তবে সেতু হওয়ায় এখন অনেক অপেক্ষার অবসান ঘটেছে।

তবে বেড়েছে অযাচিত প্রেম প্রস্তাব, ইভটিজিং, রাস্তায় গতিরোধ করে শ্লীলতাহানিসহ নানান অত্যাচারে কিশোরীরা অতিষ্ঠ। মেয়েদের গতিরোধ, শিশ দেওয়া, কুরুচিপূর্ণ কথা বলা, মোবাইলে মিউজিক বাজানোর মতো অপকর্ম সেতুতে অবস্থান নিয়ে চালিয়ে যাচ্ছে। বখাটেদের আড্ডায় ভীত-সন্ত্রস্ত অভিভাবকরা। বখাটেদের বিরুদ্ধে কথা বলতে গেলেই বিপদ আসে। সংঘবদ্ধ বখাটেরা কাউকেই পরোয়া করে না। হামলার ও মারপিটের ঘটনা ঘটায়। 

বুধবার বিকেলে সেতু এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, মেয়েদের আসা-যাওয়ার সময় তারা পেছন থেকে কটূক্তি করে, শীস দেয়। অভিভাবক সাথে থাকলেও তারা কোনো পরোয়া করে না বরং দিন যতো যাচ্ছে বখাটেদের উৎপাত ততো বাড়ছে। এই পরিস্থিতিতে উৎকণ্ঠায় থাকা অভিভাবকদের দাবি বখাটেদের হাত থেকে রক্ষাকল্পে সেতুর আশপাশে জন-সাধারণের অভিভাবক কুমারখালী উপজেলা UNO মহাদয় ও প্রশাসনের নজরদারির জোর দাবি জানান। 

ভুক্তভোগিদের মতে, এরকম ঘটনা বহু ঘটছে। কিন্তু সব ঘটনার খবর মিডিয়াতে আসছে না। এলাকায় অতিমাত্রায় বখাটেদের আনাগোনা লক্ষ্য করা গেছে। প্রতিনিয়তই বখাটেদের দ্বারা ঘুরতে আসা দর্শনাথীরা উত্ত্যক্তের শিকার হচ্ছে। এতে বেশির ভাগই আত্মসম্মানের কথা চিন্তা করে নীরবে সহ্য করছে।

তিনি আরও বলেন,  সামাজিক বিচার না থাকায় এবং যথাযথ বিচার না হওয়ায় অপরাধীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ না করে মুখ বুজে সহ্য করতে হচ্ছে।

বখাটেদের সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধির কারণ ও প্রতিকারের বিষয়ে শিক্ষাবিদ, সমাজপতি ও সচেতন মানুষ জানায়, পারিবারিক, সামাজিক ও ধর্মীয় অনুশাসন দুর্বল হয়ে পড়া ও এলাকাভিত্তিক খেলার মাঠ না থাকায় বিনোদন বঞ্চিত কিশোররা ধীরে ধীরে বখাটে হয়ে পড়ছে। তরুণ যুবকদের নিয়ন্ত্রণহীন চলাফেরার কারণেই বখাটের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। প্রতিকারের বিষয়ে পারিবারিক ও সামাজিক শাসনের পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে আরো নজদারি বাড়াতে হবে। তাছাড়া এলাকাভিত্তিক বিনোদনের জন্য খেলার মাঠ তৈরি করার উদ্যোগ নিতে হবে। যাতে ছেলেমেয়েরা খেলাধুলার সুযোগ পায়।

বখাটেদের উৎপাতের বিষয়ে পুলিশের ঊর্ধ্বতন একজন কর্মকর্তা বলেন, বখাটেদের উৎপাত বন্ধ করতে সমাজের মানুষকেই আগে এগিয়ে আসতে হবে। এলাকাভিত্তিক মানুষজন একটু সচেতন হলে বখাটেদের নিবৃত্ত করা কোনো কঠিন কাজ নয়। এরপরেও যে কোনো এলাকার বখাটেদের বিষয়ে থানা পুলিশকে জানালে পুলিশ তাৎক্ষণিকভাবে ব্যবস্থা নিবে।

অপরদিকে, বখাটেদের বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া মামলাগুলো তদারকির দায়িত্ব পালনের অভিজ্ঞতা থেকে মানবাধিকার সংস্থার এক কর্মকর্তা বলেন, বখাটেপনার অভিযোগে যাদের আটক করা হয়, তাদের বিচারে বিলম্ব হওয়ার সুযোগ নিয়ে নানা সামাজিক সমঝোতা করা হয়। এতে করে তাদের শাস্তি নিশ্চিত করা যায় না।

কুমারখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বলেন, আমরা বখাটের বিষয়ে সংবাদ পেলেই ব্যবস্থা নিচ্ছি, দর্শনার্থীদের সার্বিক নিরাপত্তায় কাজ করছে কুমারখালী থানা পুলিশ।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ