সর্বশেষ খবর

10/recent/ticker-posts

প্রিয় লালন মাজার - সৈয়দা রাশিদা বারী।।BDNews.in


প্রিয় লালন মাজার

সৈয়দা রাশিদা বারী

১৩২তম তিরোধান দিবস উপলক্ষে )

=====================================


কি দিয়ে এবং কিভাবে সাজাবো আমি তোমায়?

হে লালন মাজার, প্রিয় লালন মাজার।

বেদনার কাটার ফুলে?

না ভালোবাসার প্রেমের ফুলে?

না তোমার আধ্যাত্মিক গানের ছন্দ মধুর সুরো মালায়?

মানে সুতাই গাথবো, তোমারি মানব ধর্মের বাণী ধর্ম, সংস্কৃতি, জীবন বোধ, দিব্য জ্ঞান রাখির বন্ধনে?

মানবিকতা অসাম্প্রদায়িকতা অহিংসক গোলাপ কুসুমে?

'সব লোকে কয় লালন কি জাত সংসারে

লালন কয় জাতের কি রূপ দেখলাম না এ নজরে।'


'জাত গেলো জাত গেলো বলে একি আজব কারখানা

গোপনে যে বেশ্যার ভাত খায় তাতে ধর্মের কি ক্ষতি হয়

লালন বলে জাত কারে কয় এ ভ্রম তো গেলো না সবই দেখি তা না না।


'জাত না গেলে পাই না হরি, 

কি ছাড় জাতের গৌরব করি। ছুসনে বলিয়ে?

লালন কয় জাত হাতে পেলে, পুরাতাম তা আগুন দিয়ে।'

এক জাত নিয়েই তোমার কতো উপাদান, কতো কথা।

এমনই ইত্যাদি তোমার ভাবে, শুদ্ধচারে মাতাল আমরা।

তোমার গুরু শিষ্য ভক্ত কুলের এই বাণী ফুলের মালাতে কি সাজাবো আমি, লালন মাজার?

কোন রং রসাঙ্গন রসে? 

বলো ওহে বাংলার ভাবের রাজার ধীরাজ, ভাবের

দুনিয়া, কোন জনের বসে?

ওহে বাউল সম্রাট,

বাংলার মরমী বাউল সাধক, 

বিশ্ব ফকির লালনজী, বলো এখন তোমার লালন মাজার আমি কি দিয়ে সাজাই?

সোনা জহরত হীরা পান্না চুন্নি নিলা রুবি ফিরোজা, মুক্তা মণি মানিক্য রক্ত প্রবাল গুমেদ কেটস আই পঙ্করাজ শঙ্খরাজ কোন অমূল্য ধাতুর দ্রব্যে সাজাবো আমি লালন মাজার? 

কি তোমার চাই? 

জীবদদশায় দিইনি তো কিছু এখন মরন কালে, পরম ওফাতে দেবো।

ওহে মনশ্রী বীর, মৃত্যুঞ্জয়, 

শীর তুলে চাও

ধরি দুখান পাও।

ওহে পূজানীয় বিনোদ, 

নত শির তোলো

পিছু কালি ভোলো।

এখন কবরে তোমার দেবো অঞ্জলি, ভুজা এবং পূজা পর্ণ,

বলো কি তোমার নাই?

লাখো জনতা স্থির দিতে

এখন দেবো যে বহুৎ ঠাঁই।

নাড়ার ফকির নয় 

তুমি এখন হয়েছো বাউল শাই।

আন্তর্জাতিক মরমী শাই।

প্রত্যেকে এখন আছি ভাই ভাই

সিরাজ শাহ এর দেওয়া

তোমার তাবুর দরগায়। কলম শাহ এর সহানুভূতির সীমানায়।

মলম শাহ এর চেতনায়, 

ভাঙ্গা ঘরের দরজায়। 

ছেউরিয়া আখড়া বাড়ির আঙিনায়।

নতুন প্রজন্মরা জাত কুল বয়স দলমত নির্বিশেষে একত্রিত সবাই।

তোমার 'লালন মাজার' সবারই জেনো তীর্থকেন্দ্র। ভক্তকূল গ্রাণহীদের কল্যাণ ধাম। বাউল সম্প্রদায় ভক্ত গুণগ্রাহী হয়েছে একাকার। হে বিশ্ব মানবতা আমরা ভক্ত ভিখারী, 

হে বিশ্ব গোসাই, আমরা শিষ্য শিকারি, 

সবাই লালন সমাধি তোমার আধ্যাত্মিক গানে সিক্ত, হয়ে রিক্ত।

 হয়েছে মানবতা বোধ জাতিভেদহীন সাধনভজনে মত্ত।

তুমি আধ্যাত্মিক জ্ঞান করেছো দান। ওহে সমাজ সংস্কারক, মরমি লালন। কোন মহামূল্যবান দ্রব্যে সাজাবো- লালন মাজার।

আমি সৈয়দা রাশিদা বারী, বলো কোন যক্ষের ধন এনে, এবার সাজাবো লালন মাজার।

ওহে জয়শ্রী আকাশের চাঁদ কি তোমার চায়? নদীর স্রোত, বাতাসের তেজ কি তোমার চায়? সূর্য রশ্মি মাটির ভেদ প্রভেদ তাও এনে দিবো সবাই।

তোমার দর্শন জ্ঞানে তোমার আধ্যাত্বিক ধ্যানে স্বতঃস্ফূর্ত।

ওহে বিশ্ব ঋষি বিশ্ব সাধক, তোমার ফুল চন্দনে ধুয়ে দেবো পা। খাটি গাওয়া দুধে ধুয়ে দেবো গা। আমরা আছি তোমাতে ঋণ, বুকে বাজে সেই বীন।

মনে জলে আগুন।

কষ্ট বাড়ে দ্বিগুণ!

তোমার কষ্টে নেচেছিলো মূর্খরা

তাধিন ধিন।

ছিল তারা তুচ্ছ তারা দুষ্ট।

সেই দিন ভেবে এখনো তোমার অনুসারীরা কাঁদে 

আশা প্রত্যাশায় বুক বাধে। সুখের পরশ নিতে তোমার আধ্যাত্মিক জগত ছুইতে একদিন হলেও আসেই আসে তোমারি স্বপ্ন বিভোর আধ্যাত্মিক ওমর তীর্থস্থান, লালন মাজার।।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ