সর্বশেষ খবর

10/recent/ticker-posts

পাকিস্তানের ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে তীব্র নিন্দা ও শাহবাগে মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের মানববন্ধন।।BDNews.in


বিডি নিউজ ডেস্কঃ 
পাকিস্তানের সাথে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করার দাবিতে শাহবাগে মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের মানববন্ধন। মিডিয়া ডেলিগেশন ও ইয়ুথ ডেলিগেশনের নামে বাংলাদেশ এর বিরুদ্ধে পাকিস্তানের অপতৎপরতা ও গভীর ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানোর পাশাপাশি পাকিস্তানের সাথে সকল ধরনের কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করার দাবিতে আজ ২৮ ফেব্রুয়ারী সোমবার বিকাল ৪টায় শাহবাগ জাতীয় জাদুঘরের সামনে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ কর্মসূচী পালন করেছে বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ। সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মোঃ আল মামুন এর সঞ্চালনায় উক্ত মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুল। আরোও বক্তব্য রাখেন সংগঠনের উপদেষ্টা বীর মুক্তিযোদ্ধা জহির উদ্দিন জালাল, ভাস্কর্য শিল্পী রাশা, কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি শাহীন সিকদার, রোমান হোসাইন, মুহাম্মদ নুর আলম সরদার ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি সনেট মাহমুদসহ প্রমুখ নেতৃবৃন্দ।   

সংগঠনের সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুল বলেন, "মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তির সরকারকে সরিয়ে দেয়ার জন্য নতুন করে ষড়যন্ত্র শুরু করেছে ঢাকাস্থ পাকিস্তান হাইকমিশন। স্বাধীনতার মাস মার্চে `মিডিয়া ডেলিগেশন` এবং ইয়ুথ ডেলিগেশন ইসলামাবাদে পাঠাবার পাঁয়তারা করছে ঢাকায় পাকিস্তান মিশন। ইতিমধ্যে অনেক মিডিয়া হাউসে পাকিস্তান হাইকমিশন যোগাযোগ শুরু করেছে। কেউ কেউ পাকিস্তান হাইকমিশনের বাংলাদেশ বিরোধী ষড়যন্ত্রের এই প্রস্তাব ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করেছে। স্বাধীনতার মাসে মুক্তিযুদ্ধের পরাজিত অপশক্তি পাকিস্তানে এই উদ্দেশ্য নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। ঢাকাস্থ পাকিস্তান হাইকমিশনের বাংলাদেশ বিরোধী এই ষড়যন্ত্রের ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছে বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ।"

সংগঠনের উপদেষ্টা বীর মুক্তিযোদ্ধা জহির উদ্দিন জালাল বলেন, "১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী ৩০ লক্ষ নিরীহ বাঙালিকে হত্যা করেছিল। দুই লক্ষ বাঙালি নারীকে পরিকল্পিতভাবে গণধর্ষণ করেছিল। তারপরেও এদের বাংলাদেশ বিরোধী ষড়যন্ত্র থেমে থাকেনি। একাত্তরে পরাজিত হওয়ার প্রতিশোধ নেয়ার জন্য এদেশীয় স্বাধীনতা বিরোধী দোসরদের সহযোগিতায় পাকিস্তান ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে নির্মমভাবে হত্যা করেছিল। মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্বদানকারী জাতীয় চার নেতাকে জেলখানায় হত্যা করা হয়েছিল। পাকিস্তান আজও পর্যন্ত তার সেনাবাহিনীর গণহত্যা ও নৃশংসতার জন্য নিঃশর্ত ক্ষমা চায়নি। পাকিস্তানের ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে বীর মুক্তিযোদ্ধারা প্রয়োজনে আবার যুদ্ধে নামবে। আমরা অস্ত্র জমা দিয়েছি কিন্তু ট্রেনিং জমা দেয়নি।" 

ভাস্কর্য শিল্পী রাশা বলেন,,

"বাংলাদেশ সরকার যখন যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করছিলো, তখন পাকিস্তান বিবৃতি দিয়ে তার বিরোধিতা করেছিল; যা আসলে অন্য দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে নগ্ন হস্তক্ষেপ এবং কূটনৈতিক শিষ্টাচারের চরম লঙ্ঘন। পাকিস্তান বিভিন্ন সময় মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের সরকারকে সরিয়ে দেয়ার জন্য নানাবিধ ষড়যন্ত্র চলমান রেখেছে।" 

সংগঠনের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি সনেট মাহমুদ বলেন, "বাংলাদেশের অভ্যন্তরে স্বাধীনতা বিরোধী বিএনপি-জামাতকে অর্থায়ন, জঙ্গি নেটওয়ার্ক তৈরী ও জাল মুদ্রার ব্যবসাতে নেপথ্যে থেকে পৃষ্ঠপোষকতা করার অভিযোগ রয়েছে পাকিস্তান হাইকমিশনের বিরুদ্ধে। ভয়াবহ ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলায় পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআইয়ের প্রত্যক্ষ মদদ ছিল। কূটনৈতিক শিষ্টাচার লঙ্ঘন করে বাংলাদেশ এর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করার অপরাধে বাংলাদেশ সরকারের চাপে ২০১৫ সালে পাকিস্তান দূতাবাসের এক কূটনীতিককেও নিজ দেশে ফিরিয়ে নিতে বাধ্য হয়েছিল পাকিস্তান সরকার। পাকিস্তান আবার বাংলাদেশ বিরোধী ষড়যন্ত্র শুরু করেছে। এদেরকে রুখে দিতে হবে।"

সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মো: আল মামুন বলেন, "স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী ও স্বাধীনতার মাসে বাংলাদেশ থেকে ইয়ুথ ডেলিগেশন ও মিডিয়া ডেলিগেশন নেয়ার নামে আবার নতুন ষড়যন্ত্র শুরু করেছে পাকিস্তান। এসব ডেলিগেশনদের পাকিস্তানে নিয়ে যেয়ে প্রশিক্ষণ দিয়ে মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তির সরকারের বিরুদ্ধে নানাবিধ ষড়যন্ত্র করার কর্মকাণ্ডে নিয়োজিত করার পরিকল্পনা করেছে পাকিস্তান। স্বাধীনতার মাসে পাকিস্তানের এধরনের তৎপরতা সম্পূর্ণরূপে অগ্রহণযোগ্য এবং মুক্তিযুদ্ধের মূলনীতির পরিপন্থী। এছাড়াও গতবছর নভেম্বরে পাকিস্তান ক্রিকেটদল ঢাকায় খেলতে এসে কোনো যৌক্তিক কারণ ছাড়াই মিরপুর স্টেডিয়ামে পাকিস্তানের পতাকা উড়িয়ে অনুশীলন করে বাংলাদেশের পতাকা বিধি লঙ্ঘন করেছিল। আইসিসির নিয়মানুসারে কোনো ইভেন্ট কিংবা দ্বিপাক্ষিক সিরিজ চলাকালীন দুই দেশের পতাকা উড়তেই পারে। তবে পাকিস্তানের ক্রিকেটারদের অনুশীলনেই সেটা কেন উড়াতে হবে, তা নিয়ে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়।

প্রতিবাদের মুখে একপর্যায়ে পতাকাগুলা সরিয়ে ফেলা হয়। ইয়ুথ ডেলিগেশন ও মিডিয়া ডেলিগেশনের নামে স্বাধীন ও সার্বভৌম বাংলাদেশ এর বিরুদ্ধে একাত্তরের পরাজিত অপশক্তি পাকিস্তানের নতুন ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছে বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ। বাংলাদেশ সরকারের নিকট আহবান, অবিলম্বে পাকিস্তানের নতুন ষড়যন্ত্র ইয়ুথ ডেলিগেশন ও মিডিয়া ডেলিগেশন দ্রুত বন্ধ করাসহ ঢাকাস্থ পাকিস্তান হাইকমিশনকে তলব করে এবিষয়ে জবাবদিহি করতে হবে। একাত্তরের পরাজিত অপশক্তি পাকিস্তানের সাথে সকল ধরনের কূটনৈতিক সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন করতে হবে। অন্যথায় পাকিস্তান দূতাবাস ঘেরাওসহ কঠোর আন্দোলন গড়ে তুলবে বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ।"

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ