সর্বশেষ খবর

10/recent/ticker-posts

মিটিংয়ে যাবেন না, উল্টো কঠিন বার্তা দিলেন জায়েদ খান।।BDNews.in


বিডি নিউজ ডেস্কঃ বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচন ঘিরে জটিলতার অবসান হচ্ছেই না। ভোট শুরুর আগে থেকেই বিতর্ক-সমালোচনার শুরু। এরপর ২৮ জানুয়ারি ভোটগ্রহণ হয়। কিন্তু এখনো পর্যন্ত চলছে পদ নিয়ে টানাটানি।

এবারের নির্বাচনে সভাপতি পদে জয় পেয়েছেন ইলিয়াস কাঞ্চন, আর সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন জায়েদ খান। টানা তিনবার একই পদে বিজয়ী হয়েছেন জায়েদ। কিন্তু এবার তিনি অনিয়ম করে নির্বাচনে জয়লাভ করেছেন বলে অভিযোগ প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী নিপুণের।

জায়েদের বিরুদ্ধে কিছু প্রমাণও তিনি সামনে এনেছেন। যদিও জায়েদ খান সেগুলোকে বানোয়াট ও ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছেন।

এদিকে ভোট কেনাবেচার অভিযোগ তুলে শিল্পী সমিতির নির্বাচনী আপিল বিভাগে আবেদন করেছেন নিপুণ। সেই আবেদনের প্রেক্ষাপটে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় থেকে জেলা সমাজসেবা কার্যালয় হয়ে আপিল বিভাগের কাছে গত মঙ্গলবার একটি নির্দেশনামূলক চিঠি আসে।

চিঠিতে সাধারণ সম্পাদক ও কার্যকরী পরিষদ সদস্য পদের ফলাফল নিয়ে সিদ্ধান্ত দেওয়ার ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে আপিল বিভাগের চেয়ারম্যানের ওপর। সাধারণ সম্পাদক পদে জায়েদ খান এবং কার্যকরী পরিষদ সদস্য পদে চুন্নু বিজয়ী হয়েছেন।

আপিল বিভাগের চেয়ারম্যান পরিচালক সমিতির সভাপতি সোহানুর রহমান সোহান আজ শনিবার (০৫ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির কার্যালয়ে অভিযোগকারী ও অভিযুক্তদের নিয়ে মিটিং ডেকেছেন। সেখানে আপিল বিভাগের দুই সদস্য, নির্বাচন কমিশনের দুই সদস্যসহ অভিযোগকারী নিপুণ, অভিযুক্ত জায়েদ খান ও চুন্নুর উপস্থিত থাকার কথা।

এ ব্যাপারে আপিল বিভাগ থেকে সবাইকে চিঠিও দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এক দিন আগে শুক্রবার রাতে জায়েদ খান জানান, তিনি ও চুন্নু কেউই উপস্থিত হবেন না মিটিংয়ে। তাঁর দাবি, কোনো অবৈধ কমিটির সিদ্ধান্তের কাছে তিনি যাবেন না।

জায়েদ খান বলেন, ‘আমি কেন অবৈধ কমিটির কাছে যাব। কেন? আর গেলেইবা কী। কাল যে রায় হবে, তাতে আমার কিছুই যায়-আসে না। কারণ তারা অবৈধ কমিটি। তাদের চ্যালেঞ্জ করতে হলে আদালতে যেতে হবে।’

জায়েদ খান আরও বলেন, ‘২৯ জানুয়ারি আমাকে চূড়ান্তভাবে নির্বাচিত করা হয়েছে। তারপরও তাঁরা যদি এটি নিয়ে লড়তে চান, সেটা আদালতে হবে। আপিল বোর্ডের কোনো কার্যকারিতাই নেই। আমার আইন উপদেষ্টা একই কথা বলছেন। আপিল বিভাগ হাস্যকর কর্মকাণ্ড করছে।’

জায়েদ খান বলেন, ‘আপিল বিভাগ বলেছে, ২৯ তারিখে মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়েছে। আমরা সেই চিঠি বের করে দেখেছি, সেটা ১ ফেব্রুয়ারিতে পাঠানো। ২৯ জানুয়ারি আপিল বিভাগের কার্যকারিতা শেষ। ১ ফেব্রুয়ারি তারা মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠাতে পারে না। মন্ত্রণালয়ের কাছেও ওই চিঠি গ্রহণযোগ্য হতে পারে না।’

তাহলে মন্ত্রণালয় সেই চিঠি গ্রহণ করে আপিল বিভাগকে দিকনির্দেশনা দিয়ে চিঠি পাঠিয়েছে কীভাবে? জানতে চাইলে জায়েদ খান বলেন, ‘হয়তো মন্ত্রণালয়কে তারা ভুল বুঝিয়েছে। আপিল বিভাগের কার্যকারিতা সম্পর্কে হয়তো জানে না মন্ত্রণালয়। এ কারণেই এসব ভুল কার্যক্রম বন্ধ করতে মন্ত্রণালয়সহ আপিল বিভাগের পাঁচজনের বিরুদ্ধে লিগ্যাল নোটিশ পাঠিয়েছি। এই কার্যক্রম থামানোর অনুরোধ করছি। যদি তা না করে, তাদের মতো ৫ ফেব্রুয়ারি মিটিং করে, তাহলে এই অবৈধ কার্যক্রমের কারণে সবার নামে মামলা করব।’

এদিকে জায়েদ খানের উপস্থিত না হওয়ার ব্যাপারে আপিল বোর্ডের এক সদস্য মোহাম্মদ হোসেন বলেন, ‘মন্ত্রণালয় থেকে আমাদের যে ধরনের দিকনির্দেশনা দিয়েছে, সেভাবে কাজ করব। উভয় পক্ষের মুখের কথা শুনে, প্রমাণ দেখে, বিচার-বিশ্লেষণ করে একটি সামারি তৈরি করব। তার একটা কপি মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়ে দেব। ফলাফলের সিদ্ধান্ত মন্ত্রণালয় নেবে। এ ছাড়া কিছুই করার নেই। মিটিংয়ে উপস্থিত হতে দুই পক্ষকেই চিঠি দিয়েছি। কে এল না এল, তা আমাদের দেখার প্রয়োজন নেই।’

এ ব্যাপারে নিপুণের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।

এদিকে জায়েদের পক্ষের আইনজীবী মজীবুল হক ভুঁইয়া বলেন, ‘১ জানুয়ারি মন্ত্রণালয়ে আপিল বোর্ডের অভিযোগ করা এবং মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে অভিযোগটির বিষয়ে রায় দেয়া- কোনোটিরই এখতিয়ার নেই আপিল বোর্ডের।’

কারণ হিসেবে তিনি বলেন, ‘সাধারণ সম্পাদক পদে হেরে যাওয়া প্রার্থী নিপুণ ২৯ জানুয়ারি আপিল করার পর আপিল বোর্ড ফল দেয় এবং সে অনুযায়ী ৩০ জানুয়ারি চূড়ান্ত ফল প্রকাশ করে নির্বাচন কমিশন। তফসিল অনুযায়ী শিল্পী সমিতি নির্বাচনের আপিল বোর্ড কার্যকর ছিল ২৯ জানুয়ারি পর্যন্ত আর নির্বাচন কমিশনের কাজ শেষ করে ৩০ জানুয়ারি। এরপর আর তারা কাজ করতে পারবে না। সে অনুযায়ী মন্ত্রণালয়ে অভিযোগ ও অভিযোগটির বিষয়ে রায় দেয়ার ক্ষমতা তারা রাখে না।’

আইনজীবী জানান, যত দ্রুত সম্ভব উকিল নোটিশের জবাব চাওয়া হয়েছে। তা না হলে পরবর্তী আইনি পদক্ষেপ নেয়া হবে।

এ ব্যাপারে সোহানুর রহমান সোহান বলেন, ‘শনিবার বিকালে আমাদের মিটিং আছে। মিটিংয়ের পর কথা বলতে পারব।’

ঢাকা/মীম

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ